ইসলামে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি জায়েজ?
ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী মুসলমানের জন্য একদিকে যেমন আনন্দের পক্ষান্তরে কষ্টেরও। কারণ এই দিনে সর্বশ্রেষ্ঠ মানব, মানবতার অগ্রদূত, সাইয়্যেদুল মোরছালিন খাতামুন্নাবীয়্যিন রাহমাতাল্লি আলামিন মানবতার মুক্তির দিশারী সকল নবীর নবী, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্মদিন এবং প্রয়ান দিবস।
বিখ্যাত সাহরি হজরত আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি একবার
রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে হজরত আবু আমের (রা.)-এর বাড়িতে গিয়ে দেখতে পেলেন যে,
আবু আমের আনসারী (রা.) তার নিজের সন্তান ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনকে একত্র করে রাসুলুল্লাহ
(সাঃ) এর বেলাদাতের ইতিহাস বর্ণনা করেছেন। আল্লাহর রসূল তার এ কাজে অত্যন্ত আনন্দ অনুভব
করে বললেন- হে আমের! নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমার জন্য তার রহমতের দরজা খুলে দিয়েছেন এবং
ফেরেশতাগণ তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছেন। যারা তোমার ন্যায় এরূপকর্ম করবে তারা
তোমার মতোই রক্ষা পাবে। নূর নবী (সাঃ) এর জন্মের সংবাদ শুনে সর্বশক্তিমান আবু লাহার
তার দাসী সুয়াইবাকে মুক্ত করে দেন এবং এর কারণে তিনি (আবু লাহাব) প্রতি ঈদে মিলাদুন্নবীর
রাতে জাহান্নামেও শান্তি পান।
আরো পড়ুনঃ
হিজরির দ্বিতীয় ও তৃতীয় শতাব্দীতে, আবু কাতাদা আল-আনসারী রাদিয়াল্লাহু
আনহু বলেনঃ আল্লাহর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সোমবারের রোজা সম্পর্কে
জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তিনি বলেন, “এই দিনে (সোমবার) আমি জন্মগ্রহণ
করেছি এবং এই দিনেই আমি নবুওয়াত লাভ করেছি।” ইবনে আব্বাস বলেন: “আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সোমবারে জন্মগ্রহণ করেন, সোমবার নবুওয়াত লাভ করেন, সোমবার মৃত্যুবরণ
করেন, সোমবার মক্কা থেকে মদীনায় হিজরত করেন, সোমবার তিনি হাজারে আসওয়াদ উত্তোলন করেন।
এভাবে আমরা হাদিস থেকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্ম বার জানতে
পারি। সহীহ হাদীসের আলোকে প্রায় সকল ঐতিহাসিকগন একমত যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম সোমবার জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
ঈদে মীলাদ উন নবী (সাঃ) উদযাপনের সমর্থকরা তাদের মতামতের সমর্থনে
সূরা আল-ইমরানের ৮১ নং আয়াত উল্লেখ করেছেন। এ আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন- ‘হে প্রিয় রাসূল! সেই দিনের
ঘটনাটি স্মরণ করুন যেদিন আল্লাহ আম্বিয়ার কাছে প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন যে, আমি তোমাদেরকে
যে কিতাব ও হিকমত দিয়েছি তার সাক্ষী হিসেবে যখন একজন রসূল আসবেন, তখন তোমরা তাঁর প্রতি
ঈমান আনবে এবং তাঁকে সাহায্য করবে।’
তারা প্রমাণ হিসেবে সূরা ইউনুসের ৫৭ ও ৫৮ নং আয়াতও উল্লেখ করেছে।
এই আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, “হে মানবজাতি! তোমাদের কাছে
এসেছে তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এবং অন্তরের পবিত্রতা, হেদায়েত ও রহমত ঈমানদারদের
জন্য। হে নবী বলুন, তারা যেন আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর করুণাতে আনন্দিত হয়। এটা তাদের
সমস্ত সম্পদ জমা করার চেয়ে উত্তম।