Breaking

June 27, 2022

নামাজ ছেড়ে দেয়ার পরিণতি/নামাজ না পড়ার শাস্তি

নামায ছেড়ে দেয়ার পরিণতি

পবিত্র মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন-

فويل للمصلين الذين هـم عـن صـلـوتـهـم شـاهـون

উচ্চারণঃ ফাওয়াইলুল লিলমুসাল্লীনাল লাযিনাহুম আন সালাতিহিম ছাহুন।

অর্থঃ যে সব লোক নামায পড়তে অলসতা করে, তাদের জন্য ওয়ায়েল দোযথ নির্দিষ্ট আছে।

 

হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) এরশাদ করেন, জাহান্নাম এক বিরাট গর্ত আছে, তার নাম "ওয়ায়েল।” এটি এতই কঠিন আযাবে পরিপূর্ণ যে, অন্যান্য দোযখ প্রত্যহ ৭০ বার আল্লাহ পাকের নিকট প্রার্থনা করে যে, হে আল্লাহ! তুমি আমাকে ওয়ায়েল দোযখ থেকে রক্ষা কর। চিন্তা করে দেখুন যারা নামায পড়তে আলস্য করে, ঠিক সময়ে পড়ে না, কখনো পড়ে কখনো পড়ে না, তাদের কিরূপ শাস্তি হতে পারে? হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, প্রতি ওয়াক্ত নামায ছেড়ে দেয়ার জন্য ৮০ হোকবা পরিমান সময় দোযখে থাকতে হবে। ৮০ বছরে এক হোকবা হয়। যারা কখনো নামায পড়ে আবার কখনো পড়ে না, তাদের জন্যই এ শাস্তি। যারা মোটেই পড়ে না তাদের ব্যাপারে তো শাস্তির কোনো হিসাব নিকাশ নেই, তাদের অনন্তকাল দোযখের কঠোর শাস্তি ভোগ করতে হবে যার শেষ একমাত্র আল্লাহর হাতে।


সম্পর্কিত পোষ্ট

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ত

নামাযের প্রয়োজনীয় দোয়াসমূহ

নামাজ বা সালাত আদায়ের নিয়ম-Namaj Adayer Niyom

কাযা নামায পড়ার নিয়ম/Kaja Namaz Porar Niyom

 

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মুসলমান এবং কাফেরের মধ্যে একমাত্র পার্থক্য হচ্ছে নামায। মুসলমানগণ নামায পড়ে আর কাফেররা পড়ে না। এতেই কাফেরের সাথে তার পার্থক্যটুকু দূর হয়ে যায়। সুতরাং সেও কাফেরের মধ্যে গণ্য হয়। যদি কেউ অবহেলা বশতঃ বলে “কিসের নামায?” নামায পড়ে কি হবে? তবে সে কাফের হবে। কত কী লোক নানা প্রকার আরজি দেখিয়ে বলে আমরা গরিব লোক, সারাদিন রুজি-রোজগার কাজে ব্যস্ত থাকি, আমাদের নামায পড়ার সময় কোথায়? কিন্তু তারা চিন্তা করে না রুজি-রোজগার দুনিয়ার অস্থায়ী আরাম আয়েশের জন্য, আর নামায অনন্তাকালের সুখ-শান্তির জন্য। যে ব্যক্তি দুই দিনের সুখের আশায় অনন্ত কালের সুখ-শান্তির নষ্ট করে, তার মতো নির্বোধ আর নাই? আরো চিন্তা করে দেখুন, রুজি-রোজগার দেয়ার মালিক আল্লাহ তায়ালা। তিনি যদি মেহেরবানী করে না দেন, তবে সারাদিন কঠোর পরিশ্রম করেও এক পয়সাও রোজগার করতে পারবে না। আর যদি তিনি অনুগ্রহ করে দেন, এক ঘণ্টার মধ্যে পৃথিবীর রাজত্ব পর্যন্ত দান করতে পারেন। সুতরাং তুচ্ছ রুজি রোজগারের জন্য মহামূল্যবান সম্পদ নামায ছেড়ে দেয়া কখনই বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারে না।

 

অনেক স্ত্রীলোক বলে থাকে ছেলেমেয়ে নিয়ে সংসারে নানা ঝামেলায় নামায পড়ার সময় হয়ে উঠে না। আবার এক শ্রেণির লোকেরা বলে আমার অতিরিক্ত কাপড় নেই, একখানা কাপড় মাত্র, তাও ছেলে মেয়ের মল-মূত্র নাপাক হয়ে থাকে, নামায পড়ব কীভাবে? জেনে রাখুন! এ সব বাজে ওজরের কোনো মূল্য নেই। যাদের নামায আদায় করা অভ্যাস আগ্রহ আছে তারা শত অসুবিধার মধ্যেও নামায পড়ে। আর যারা পড়বে না তাদের ওজরের অন্ত নেই। কিয়ামতের দিন এসব ওযর আপত্তি কোন কাজে আসবে না।


সম্পর্কিত পোষ্ট

নামায অবস্থায় অযূ ভঙ্গ হলে করণীয়

সাহু সিজদাহ করার নিয়ম/Sahu Sijdah Korar Niyom

প্রথম কাতারে নামায পড়ার ফযীলত/Protom Katare Namaz Porar Fojiot


 

তিনটি আযাব হবে মৃত্যুকালে

নামায পরিত্যাগকারীর মৃত্যুকালে তিনটি আযাব হবে

(১) নামায পরিত্যাগ কারীর অত্যন্ত দুর্দশাগ্রস্ত হয়ে মরবে।

(২) ক্ষুধার্ত অবস্থায় মরবে।

(৩) মৃত্যুকালে তার এত পিপাসা হবে যে, তার ইচ্ছা হবে দুনিয়ার সব পানি পান করে ফেলতে।

 

তিনটি আযাব হবে কবরে

নামায পরিত্যাগকারীর তিনটি আযাব কবরের মধ্যে হবে-

(১) কবর এরূপ সংকীর্ণ হবে যে, এক পার্শ্বের হাড় অপর পার্শ্বের হাড়ের সাথে মিলিত হয়ে চূর্ণ- বিচূর্ণ হয়ে যাবে।

(২) কবর দিন-রাত সর্বদা অগ্নি প্রজ্জ্বলিত রাখা হবে।

(৩) আল্লাহ তায়ালা তার কবরে একজন আযাবের ফেরেশতা নিযুক্ত করবে। তার হাতে লোহার মুগুর থাকবে এবং সে মৃত ব্যক্তিকে বলতে থাকবে- হতভাগা! দুনিয়ায় কেন নামায পড়িস নি? আজ তার প্রতিফল ভোগ কর। এই বলে ফজরের নামায না পড়ার জন্য ফজর থেকে যোহর পর্যন্ত যোহরের নামায না পড়ার জন্য যোহর থেকে আসর পর্যন্ত, মাগরিবের নামাযের জন মাগরিব থেকে এশা পর্যন্ত ও এশার নামায না পড়ার জন্য এশা থেকে ফজর পর্যন্ত মারতে থাকবে। প্রত্যেকবার মারার সময়ে বজ্রপাতের ন্যায় শব্দ হবে এবং তার শরীর চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে ৫০ গজ মাটির নিচে ঢুকে যাবে। ফেরেশতা পুনরায় তাকে তুলে তার হাড়-মাংস একত্র করলে, আল্লাহ তায়ালার হুকুমে পুনরায় শরীর গঠিত হবে এবং ফেরেশতা আবার তাকে প্রহার করতে থাকবেন। এভাবে কিয়ামত পর্যন্ত শাস্তি চলতে থাকবে।

 

তিনটি আযাব হবে হাশরের ময়দানে

বেনামাযীর তিনটি আযাব হাশরের মাঠে হবে যেমন-

(১) একজন ফেরেশতা তাকে ঊর্ধ্ব আধোমস্তক অবস্থায় হাশরের মাঠে নিয়ে যাবে।

(২) আল্লাহর অনুগ্রহের দৃষ্টিতে তাকে দেখবেন না।

(৩) সে চিরকালের জন্য দোযখী হয়ে আপন কৃতকর্মের ফল ভোগ করবে।

হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমার উম্মতের মধ্যে আট শ্রেণির লোকের ওপর কিয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা অসন্তুষ্ট হবেন। তাদের চেহারা অত্যন্ত কুশ্রী ও ভীষণাকার ধারণ করবে! হাশরের মাঠে প্রত্যেক ব্যক্তি তাদেরকে দেখে অত্যন্ত ঘৃণা প্রকাশ করবে। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন ইয়া রাসূলুল্লাহ! সে সব হতভাগা কারা? তদুত্তরে হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তারা হলো-

(১) জেনাকার,

(২) জালিম বাদশাহ বা হাকিম,

(৩) পিতা- মাতার অবাধ্য সন্তান,

(৪) সুদখোর,

(৫) পরনিন্দাকারী,

(৬) অন্যায় অত্যাচারী,

(৭) মিথ্যা সাক্ষ্যদাতা ও

(৮) বেনামাযী

 

এদের মধ্যে বেনামাযীর শাস্তিই সর্বাপেক্ষা অধিক হবে। বেনামাযীকে অগ্নির পোশাক পরিয়ে অগ্নির শিকলে আবদ্ধ করে অগ্নির কোড়া মারা হবে। বেহেশত তাকে সম্বোধন করে বলতে থাকবে- হতভাগা! তুমি আমার দিকে এসো না। দোযখ তাকে সম্বোধন করে বলবে, এসো এসো, আমি তোমার জন্যই অপেক্ষা করছি, তোমার দ্বারা আমার পেটের জ্বালা নিবারণ করব। এ বলে দোযখ তার লেলিহান শিখাযুক্ত জিহ্বা বের করে তাকে আপন উদরের ভিতরে টেনে নেবে।

 

হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, দোযখের ভিতর “লমলম' নামে একটি কূপ আছে, তা অসংখ্য সাপ-বিচ্ছুতে পরিপূর্ণ। প্রত্যেকটি সাপ পাহাড় সদৃশ্য ও এক একটি বিচ্ছু হস্তী সমতুল্য। সে সব সাপ বিচ্ছু সর্বদা বে- নামাযীকে দংশন করতে থাকবে। একবার দংশন করলে ৭০ বছর পর্যন্ত ভীষণ যন্ত্রণা স্থায়ী থাকবে অথচ সেখানে কারো মৃত্যু হবে না। এত ভয়াবহ হলো বে-নামাযীর আযাব। প্রাণ প্রিয় বন্ধুরা আসোন আমার আজ থেকে আর নামাজ কামাই না দেই, আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাওফিক দান করুণ, আমীন।


আরো পড়তে পারেনঃ

৫ টি কথায় সকল চাওয়া/ যেসব আমলে দ্রুত দোয়া কবুল হয়

তওবা কবুল হওয়ার শর্ত/Taoba Kobul Hoyar Sorto

সালাতুস তাসবীহ

দোয়া করার নিয়ম

হজের প্রস্তুতি/Hajj 2022

হজ্জের ফরয, ওয়াজিব সুন্নাতসমূহ

হজ্জের গুরুত্ব ও ফযীলত-Hajjer Gurutto o Fajilat

বেসরকারিব্যবস্থাপনায় হজ করতে কত টাকা লাগবে?

এ বছর হজ করতে পারবেন ১০ লাখ

কোন দেশ থেকে কত মানুষ হজে যেতে পারবে

সদকায়ে ফিতর/ফিতরা এর মাসায়েল/sadkaye fittor

নামাজ ও যাকাত এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

জাকাতের হিসাব করবেন যেভাবে ২০২২/Zakat 2022

কুরবানীর ইতিহাস, তত্ত্ব, ফাযায়েল ও মাসায়েল

কোরবানীর ইতিহাস ও ওয়াজিব হওয়ার শর্ত/Qurbani

কুরবানির পশু জবাইয়ের দোয়া ও পদ্ধতি

পশু যবেহ করার সময় বিশেষ লক্ষণীয় ও কর্তব্য

মহানবীকে স্বপ্নে দেখার উপায়-Mohanobi ke sopne dekhar amol

যে সময় দোয়া কবুল হয়-Je Somoy Dua Korle Kobol Hoy

ঈদের নামাযের ফজীলত ও মাসয়ালা

ঈদের নামাজের নিয়ত ও নিয়ম-Eider namajer niyot o niyom

আকিকার গোসত কতদিন খাওয়া যাবে-Akikar Mangso

আকীকা এবং কিছু ভ্রান্ত ধারণা/Akikar Niyom

রোজা ভঙ্গের কারণসমুহ

রোজার মাকরুহসমূহ

রোজার কাফ্‌ফারা-র মাসায়েল

রোজার কাযার মাসায়েল

নফল রোজার মাসআলা/Nafal Rojar Masala

তওবার নামাজ কিভাবে পড়তে হয়

ইবাদত কবূল হওয়ার শর্তাবলী ১ম পর্ব

ইসলাম ও ঈমানের দাওয়াত

সূরা ফাতিহা/Surah Fatiha

সূরা ফাতিহার শানে নুযূল/ Sura Fatihar Sane Nuzul

সূরা ফাতিহার বৈশিষ্ট্য ও ফজিলত/Sura Fatihar Fojilot

কবিরা গুনাহসমূহ/Kobira Gunahasomuh

পাঁচ কালেমা আরবি ও বাংলা অর্থসহ উচ্চারণ/5 Kalema

শিরকের বিবরণ/Shirok

প্রস্রাব-পায়খানা করার নিয়ম/Prosrab-paykhana korar niyom

ঢিলা-কুলুখ ব্যবহারের নিয়ম/hila-kulukh beboharer niyom

মা-বাবা সাথে সন্তানের আচরণ কেমন হবে/Baba-Maa

জুমার নামাজ/JumarNamaz

জুমুয়ার নামায পড়ার নিয়ত/Jumuwar namaz poar niyot

জুমার গুরুত্ব ও ফজিলত/Jumar Gorotto o Fojilot

ইসলামে নারীর পর্দার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

মহিলাদের যাদের সাথে দেখা দেয়া জায়েয

মহিলাদের পোশাক পরিচ্ছদ

Popular Posts