স্বর্ণ ও রৌপ্যের যাকাত
স্বর্ণ ও রূপাতে যাকাত
ওয়াজিব, যদি তা নেসাব পরিমানে পৌঁছে।
স্বর্ণের মাঝে যাকাতের
নেসাব বিশ মেসকাল (প্রায় ৮৫ গ্রাম)
রূপারে যাকাতের নেসাব
দুইশত দেরহাম (প্রায় ৫৯৫ গ্রাম)।
সুতরাং যে ব্যক্তি স্বর্ণ
ও রূপার নেসাবের মালিক হবে সে প্রতি চল্লিশ ভাগে একভাগ যাকাত হিসাবে প্রদান করবে।
অতএব, বিশ মিসকাল স্বর্ণ
থেকে আধা মেসকাল (প্রায় ২.১২৫ গ্রাম) স্বর্ণ প্রদান করবে এবং রূপার দুইশত দেরহাম
থেকে পাঁচ দেরহাম (প্রায় ১৫ গ্রাম) প্রদান করবে।
খাঁদ মিশ্রিত স্বর্ণ খাটি
স্বর্ণের বিধানেই যদি স্বর্ণ (এর অংশ) বেশী হয়। খাদ মিশ্রিত রূপা খাটি রূপার
বিধানেই, যদি রূপা (এর অংশ) বেশী হয়। আর যদি খাদ বেশী হয় তবে খাদ মিশ্রিত স্বর্ণ
ও রূপা আসবাব সামগ্রীর বিধানভূক্ত হবে।
ইমাম আবুহানিফা (রহঃ) এর
মতে নেসাবের অতিরিক্ত যা কিছু হবে তা নেসাবের এক পঞ্চমাংশ না হওয়া পর্যন্ত তাতে
যাকাত নেই।
ইমাম আবু ইউসুফ ও ইমাম
মুহাম্মদ (রঃ) বলেন, নেসাবের অতিরিক্ত যা কিছু হবে তার মাঝেও চল্লিশভাগে একভাগ
ওয়াজিব হবে। চাই অতিরিক্তটা নেসাবের এক পঞ্চমাংশে পৌঁছুক বা না পৌঁছুক। তাদের মতামত
অনুযায়ী ফাতওয়া।
আরোও পড়ুন
নামাজ ও যাকাত এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা
ইবাদত কবূল হওয়ার শর্তাবলী ১ম পর্ব
ইসলাম ও ঈমানের দাওয়াত
নেসাবের মালিকদের ইচ্ছা,
যদি চায় স্বর্ণ ও রূপার যাকাত ওজন করে স্বর্ণ ও রূপার টুকরা দ্বারা প্রদান করবে। যদি
চায় প্রচলিত মুদ্রায় যতটুকু যাকাত আসে তার মূল্য হিসাব করবে এবং শহরের প্রচলিত
মুদ্রায় তা প্রদান করবে। যদি চায় কোন আসবাব অথবা কায়েল করে বিক্রি হয় এমন কোন জিনিস
কিংবা ওজন করে বিক্রি হয় এমন কোন দ্রব্য স্বর্ণ ও রূপার যাকাত মূল্যের বিনিময়ে
প্রদান করবে। উরুজ (স্বর্ণ, রূপা ও গৃহপালিত পশু ছাড়া অন্যান্য সম্পদ) এর যাকাত
স্বর্ণ, রূপা ও গৃহপালিত পশু ছাড়া যা কিছু আছে সবই উর্জ, এর বহুবচন উরুজ।
নিম্মোক্ত শর্তাবলী
সাপেক্ষে উরুজের মাঝে যাকাত ওয়াজিব হয়।
(১) উরুজ দ্বারা উরুজের
মালিকের ব্যবসার নিয়ত হওয়া।
(২) ব্যবসার উরুজের মূল্য
স্বর্ণ অথবা রূপার নেসাবে পৌঁছা। অর্থাৎ বিশ মিসকাল স্বর্ণ অথবা দুইশত দেরহাম
রৌপ্যের যে মূল্য আসে ব্যবসার উরুজের মূল্য তার সমান হওয়া ।
(৩) মুসলিম ব্যবসায়ী
ব্যবসার বৎসর শেষ হওয়ার প্রাককালে তার মালিকানাধীন সমস্ত ব্যবসায়ী পণ্যের হিসাব
করবে। যদি বাজার হিসাবে তার মূল্য নেসাবে পৌঁছে তবে সে তার যাকাত আদায় করবে।
অর্থাৎ তার চল্লিশভাগে একভাগ প্রদান করবে। আর যদি পণ্যের মুল্য- স্বর্ণ বা রৌপ্যের
নেসাবে-র মুল্যের সমান না হয় তবে তাতে যাকাত নেই।
ব্যবসার পণ্যের মূল্য
নির্ধারণ করা হবে ব্যবসায়ী মহলের প্রচলিত লেনদেনের নীতিমালার ভিত্তিতে। ব্যবসার
পণ্যের মাঝে ব্যবসার সুবিধার্থে ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় ফার্ণিচার ও ডেকোরেশনের মূল্য
অন্তর্ভূক্ত হবে না। যদি কেউ জমি বা স্থাবর সম্পত্তি অথবা গৃহপালিত পশুর মালিক হয়
অতঃপর সে তা দ্বারা ব্যবসার নিয়ত করে তাহলে যখন থেকে সে তা দ্বারা কার্যত ব্যবসা
শুরু করবে তখন থেকে ব্যবসার বৎসর শুরু হবে।
ঋণ সম্পদের যাকাত
যাকাত আদায় হিসাবে ঋণ
তিন প্রকার।
(ক) কবী (মেযবুত) ঋণ ।
(খ) মুতাওয়াসসিত (মধ্যম)
ঋণ ।
(গ) জয়ীফ (দূর্বল) ঋণ।
১. কবী ঋণঃ ঋণের অর্থ এবং ব্যবসার পণ্যের বিনিময়ে যদি
ঋণগ্রহিতা ঋণের স্বীকার করে, সে দেওলিয়া হলেও। অনুরূপভাবে যদি ঋণগ্রহিতা ঋণের কথা
অস্বীকার করে কিন্তু ঋণ দাতা অস্বীকারকারী ঋণগ্রহিতার বিরুদ্ধে প্রমাণ পেশ করতে
সক্ষম হয়। তাহলে তাও কবী ঋণ।
যদি ঋণ কবী হয় তবে
ঋণদাতা চল্লিশ দেরহাম অথবা (তার সম পরিমাণ অর্থ) উসূল করলে তার উপর যাকাত প্রদান
করা ওয়াজিব হবে।
আরোও পড়ুন
নামাযের প্রয়োজনীয় দোয়াসমূহ
নামাজ বা সালাত আদায়ের নিয়ম-Namaj
Adayer Niyom
৫ টি কথায় সকল চাওয়া/ যেসব আমলে দ্রুত দোয়া কবুল হয়
তওবা কবুল হওয়ার শর্ত/Taoba Kobul Hoyar Sorto
সুতরাং যখনই সে চল্লিশ
দেরহাম (বা তার সম পরিমাণ অর্থ) উসূল করবে, সে এক দেরহাম যাকাত প্রদান করবে।
ইমাম আবুহানিফা (রহঃ) এর
মতে চল্লিশ দেরহামের কম উসূল করলে তার উপর কোন কিছু প্রদান করা ওয়াজিব নয় । ইমাম
আবু ইউসুফ ও ইমাম মুহাম্মদ (রঃ) বলেন, উস্লকৃত ঋণ কম হোক বা বেশী হোক উসূলকৃত
অংশে যাকাত ওয়াজিব হবে। কবী ঋণের ক্ষেত্রে যখন থেকে নেসাবের মালিক হবে তখন থেকে
এক বৎসরের হিসাব হবে, যে সময় ঋণ উসূল করেছে তখন থেকে নয়। সুতরাং (ঋণ উসূলের)
আগের বছর গুলোর যাকাত ওয়াজিব হবে কিন্তু উসূলে পরই (যাকাত) আদায় করা তার জন্য
আবশ্যক হবে।
২. মুতাওয়াসসিত (মধ্যম)
ঋণঃ যা ব্যবসার (পণ্যের) ঋণ
নয় বরং নিত্য- প্রয়োজনীয় কোন জিনিসের বিক্রয় মূল্য, যা বিক্রেতা ক্রেতার কাছে
বিক্রয় করেছে- যেমন, বসবাসের ঘর, পরিধানের কাপড়, খাদ্য দ্রব্য-আর ক্রেতার
জিম্মায় বিক্রয় মূল্য (পাওনা) রয়ে গেছে।
মুতাওয়াসসিত ঋণের মাঝে
যাকাত ওয়াজিব হয় না, তবে বিক্রয় মূল্য বাবদ পূর্ণ নেসাব পরিমাণ অর্থ যদি সে
উসূল করে তাহলে ওয়াজিব হবে।
উদাহরণ স্বরূপ, যদি
দেনাদার এক হাজার দেরহাম দেনা থাকে আর পাওনাদার তা থেকে দুইশত দেরহাম উসূল করে
তাহলে তার উপর পাঁচ দেরহাম (যাকাত) প্রদান করা ওয়াজিব হবে। ইমাম আবুহানিফা (রহঃ)
এর মতে নেসাব থেকে কম উসূল করলে যাকাত ওয়াজিব হবে না। আর ইমাম আবু ইউসুফ ও ইমাম
মুহাম্মদ (রহঃ) বলেন, উসূলকৃত ঋণ কম হোক বা বেশী হোক উস্লকৃত অংশে যাকাত ওয়াজিব
হবে।
মুতাওয়াসসিত ঋণের
ক্ষেত্রে এক বৎসরের হিসাব শুরু হবে যখন থেকে সে নেসাবের মালিক হয়, যখন উসূল করবে
তখন থেকে নয় ।
৩ জয়িফ (দূর্বল) ঋণঃ মাল নয় এমন জিনিসের বিনিময়ে যা (আবশ্যক) হয়।
যেমন, স্ত্রীর মহরানা। কারণ মহরানা- স্বামী তার স্ত্রী থেকে নিয়েছে এমন কোন মালের
বিনিময় নয়। ডির্ভোসের (কারণে স্ত্রী থেকে স্বামীর) পাওনা, ওসীয়তের পাওনা
(অর্থাৎ কেউ কারো নামে সম্পদের ওসীয়ত করে গেলে ঐ সম্পদের পাওনা,) ইচ্ছাকৃত হত্যার
দায়ে দণ্ডিত ব্যক্তির উপর সমঝোতামূলক পাওনা এবং দিয়ত (রক্তপণ) এ প্রকারের
অন্তর্ভূক্ত।
জয়ীফ ঋণের ক্ষেত্রে পুরা
নেসাব উসূল না করা ব্যতিরেকে এবং উসূল করার সময় থেকে এক বৎসর অতিবাহিত না হলে
যাকাত আদায় ওয়াজিব নয়। সুতরাং জয়ীফ ঋণের ক্ষেত্রে (উসূল করার) আগের বছর গুলোর
যাকাত ওয়াজিব হবে না।
সালাতুস তাসবীহ
দোয়া করার নিয়ম
হজ্জের ফরয, ওয়াজিব সুন্নাতসমূহ
হজ্জের গুরুত্ব ও ফযীলত-Hajjer Gurutto o Fajilat
বেসরকারিব্যবস্থাপনায় হজ করতে কত টাকা লাগবে?
এ বছর হজ করতে পারবেন ১০ লাখ
কোন দেশ থেকে কত মানুষ হজে যেতে পারবে
কুরবানীর ইতিহাস, তত্ত্ব, ফাযায়েল ও মাসায়েল
কোরবানীর ইতিহাস
ও ওয়াজিব হওয়ার শর্ত/Qurbani
কুরবানির পশু জবাইয়ের দোয়া ও পদ্ধতি
পশু যবেহ করার সময় বিশেষ লক্ষণীয় ও কর্তব্য
মহানবীকে স্বপ্নে দেখার উপায়-Mohanobi ke sopne dekhar amol
যে সময় দোয়া কবুল হয়-Je Somoy Dua Korle Kobol Hoy
ঈদের নামাজের
নিয়ত ও নিয়ম-Eider namajer niyot o niyom
আকিকার গোসত কতদিন খাওয়া যাবে-Akikar Mangso
আকীকা এবং কিছু ভ্রান্ত ধারণা/Akikar Niyom
নফল রোজার মাসআলা/Nafal Rojar Masala