পর্দার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা
পর্দার শাব্দিক অর্থ ঢেকে রাখা। শরীয়তের পরিভাষায় পর্দার অর্থ হল পুরুষের দৃষ্টি থেকে নারীর সর্বাঙ্গ এবং নারীর দৃষ্টি থেকে পুরুষের দেহ আড়াল করা।
পর্দা করা প্রত্যেক মুসলমান ব্যক্তির জন্য ফরজ। যাদেরকে চিরদিনের জন্য বিবাহ করা হারাম কেবলমাত্র তাদের সাথে দেখা দেয়া জায়েয। এদেরকে মোহরেম বলা হয়। গায়ের মোহরেম বা যাদের সাথে বিবাহ জায়েয তারা আত্মীয় কিংবা অনাত্মীয়, নিকটতম বা যত দূরেরই হোক না কেন তাদের সাথে দেখা সাক্ষাত ও নির্জন আলাপ করা হারাম।আল্লাহ
তায়া'লা কালাম পাকে এরশাদ করেছেন- “হে নবী) সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)!
আপনি মোমিনদেরকে বলে দিন তারা যেন (গায়রে মোহরেম থেকে) চক্ষুকে নীচের দিকে রাখে
এবং লজ্জাস্থানকে হেফাজত করে। এটা তাদের জন্য অত্যন্ত পবিত্রতম কাজ। নিশ্চয়
আল্লাহ তায়া'লা তাদের কর্মপন্থা সম্বন্ধে জ্ঞাত। হে নবী! আপনি মোমেনাদেরকে বলে
দিন তারা যেন তাদের চক্ষুকে নীচের দিকে রাখে এবং লজ্জাস্থানকে হেফাজত করে। এবং
তারা যেন নিজেদের অঙ্গ সৌষ্ঠবসমূহ প্রকাশ না করে। অবশ্য তাদের যতটুকু অনিচ্ছায়
প্রকাশ পায় সে জন্য জবাবদিহি করতে হবে না। আর তারা যেন তাদের গলা, বুক ও মাথা
ওড়না দিয়ে ঢেকে রাখে।”
সম্পর্কিত পোষ্ট
মহিলাদের যাদের সাথে দেখা দেয়া জায়েয
এই আয়াত দ্বারা
প্রমাণ হল যে, পুরুষ ও স্ত্রীলোক উভয়ের জন্য পর্দার হুকুম। স্ত্রীলোকদের যেরূপ পর
পুরুষ থেকে নিজেকে পর্দার আড়ালে রাখতে হবে, অনুরূপভাবে পুরুষদেরও স্ত্রীলোকদেরকে
পর্দায় থাকার সুযোগ দিতে হবে এবং তাদের নজর থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। অত্র
আয়াতে বলা হয়েছে যে, যতটুকু অনিচ্ছায় প্রকাশ পায় তাতে দোষ নেই। এর অর্থ হল,
ইসলাম সহজ সরল এবং শান্তির ধর্ম। বান্দা আদায় করতে পারবে না এরূপ কোন হুকুম ইসলাম
দেয়নি। অসম্ভব বা অসাধ্য কোন হুকুম চাপিয়ে দেয়া হয় নি। স্ত্রীলোকের কাজ-কর্ম
বা চলাফরার সময় শরীরের যে অংশ বের করা প্রয়োজন হয়ে পড়ে, তা বের করলে গুনাহ হবে
না। যেমন- হাতের কব্জি, পায়ের পাতা এবং মুখমণ্ডল। এর বেশী মোহরেম ব্যক্তিদেরকেও
দেখান জায়েয নেই। নিজেকে ফেতনা থেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য বাইরে বের হলে হাতে
পায়ে মোজা এবং মুখমন্ডলে বোরকার নেকাব ব্যবহার করা উত্তম। এটাই তাকওয়া বা মূল
পর্দা।
মহান
স্রষ্টার সৃষ্টিগতভাবে নারী পুরুষ পরস্পরের পতি একটা মাদকতাপূর্ণ আকর্ষণ রয়েছে।
যৌবনে পদার্পণ করলেই একজন অপর জনকে চুম্বকের মত আকর্ষণ করে। তখন বাধা প্রাপ্ত না
হলে অবৈধ মিলন হয়ে থাকে । বিবাহ ব্যতীত নারী পুরুষের অবৈধ মিলন সম্পূর্ণ হারাম।
তাই ছেলে-মেয়ে যৌবনের নিকটে পৌঁছলেই পর্দায় থাকার অভ্যাস করাতে হবে এবং যৌবন
প্রাপ্তির সাথে সাথে অবশ্যই পর্দায় থাকার সম্পূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করে যথাসম্ভব
শীঘ্র বিবাহ দিতে হবে। অন্যথায় যদি তাদের দ্বারা কোন গুনাহের কাজ হয় সে জন্য
মাতা-পিতা বা মুরুব্বীরাও গুনাহগার হবে। নারী-পুরুষ পরস্পরের মধ্যে অবাধ
দেখা-সাক্ষাৎ, আলাপ-আলোচনা, চলাফিরা না হলে একে অপরের প্রতি আসক্ত হয় না এবং অবৈধ
মিলনও ঘটে না। এই মহাগুনাহ ও ধ্বংসাত্মক পাপাচার হতে যাতে আশরাফুল মাখলুকাত (মানুষ
জাতি) বেঁচে থাকতে পারে সে জন্যই পর্দার হুকুম । আল্লাহ তা'য়ালা পবিত্র কুরআনে
এরশাদ করেছেন
وقرن في بيوتكن ولا تبرجن تبرج الجاهلية الأولى -
উচ্চারণঃ ওয়াকারিনী
ফীবুয়ুতিকুন্না ওয়ালা তাবাররুজনা তাবাররুজাল জাহিলিয়্যাতিল উলা ।
অনুবাদঃ “হে নারীগণ!
তোমরা নিজ নিজ গৃহে অবস্থান কর। প্রাচীন মুর্খ যুগের মত নিজদেরকে প্রদর্শন করো
না।" (সূরা আহ্যাব্-৩৩)
নামাযের প্রয়োজনীয় দোয়াসমূহ
নামাজ বা সালাত আদায়ের নিয়ম-Namaj Adayer Niyom
৫ টি কথায় সকল চাওয়া/
যেসব আমলে দ্রুত দোয়া কবুল হয়
তওবা কবুল হওয়ার শর্ত/Taoba Kobul Hoyar Sorto
জাহেলি
যুগে স্ত্রীলোকেরা বেপর্দা ও নির্লজ্জ ভাবে চলাফেরা করত। তাদের পোশাক-পরিচ্ছদে ছিল
না শালীনতা। নারী-পুরুষ অবাধ চলাফেরা, মেলা-মেশা করত। যার কারণে নারীরা পুরুষদের
কাছে হয়েছিল অবহেলার পাত্র। নিজেদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছিল। তারা বাজারের
পণ্য হিসেবে ব্যবহৃত হত। পুরুষ যখন যাকে ইচ্ছা বিবাহ করত, আবার ইচ্ছা মত তালাক
দিত।
বর্তমানে
আমাদের সমাজের নারীদের অবস্থা প্রায়ই জাহেলিয়াত যুগের নারীদের সাথে তুলনা করা
যায়। বেহায়া বেপর্দা ভাবে উলঙ্গ, অর্ধ উলঙ্গ পোশাকে বাইরে চলা-ফেরা করা তাদের
নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার কারণে যেনা, ব্যভিচার, হাইজ্যাক,
নারী নির্যাতন, নারী পাচার, খেয়াল খুশীমত বিবাহ, ইচ্ছা অনুযায়ী পরিত্যাগ ইত্যাদি
চলছে ।
নারীমুক্তি,
নারী স্বাধীনতার নামে আজকের মা-বোনদেরকে বাজারের পণ্য হিসেবে ব্যবহার করতেছে।
আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশ পরিত্যাগ করে যতই
নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে মিটিং মিছিল আন্দোলন করুক না কেন তাতে কোন দিনই ফলোদয়
হবে না। বর্তমানে সমাজের অবস্থা নিয়ে আলোচনা করার প্রয়োজন নেই। কেননা এটা কারও
দৃষ্টির বাইরে নয়। আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্দা
সম্বন্ধে কি বলেন, আর আমরা কোন পথে চলছি তা চিন্তা করলেই বুঝা যায়। আফসোস! আজকের
কিছু আলেম লোকও সব কিছু জেনে বুঝেও সমাজের আবহাওয়ার সাথে তাল মিলিয়ে ঘর থেকে
পর্দা বিদায় করে স্ত্রী-কন্যাদেরকে রাস্তায় নামিয়েছে। অনেকে এত দূর না পৌছলেও
আত্মীয়-স্বজন বা নিকটতমদের সাথে পর্দা করার কোন আবশ্যকতা মনে করে না। যার বিষময়
ফল যে তারা ভোগেন না এমন নয়। যা হোক, কে কি করলো তা আমাদের দেখার বিষয় বা চলার
রাস্তা নয়। আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পথ ও মতই
আমাদের একমাত্র চলার পথ। পর্দা সম্বন্ধে আল্লাহ তা'য়ালা অন্য এক আয়াতে বলেছেন
قل للمؤمنات يغضضن من أبصارهن ويحفظن فروجهن -
উচ্চারণঃ কুল লিল্মু'মিনা-তি
ইয়াগ্দুনা মিন্ আবছোয়ারিহিন্না ওয়া ইয়াফাজ্না ফুরূজাহুন্না ওয়ালা- ইউদীনা
যীনাতাহুন্না ।
অনুবাদঃ “হে নবী! আপনি
ঈমানদার নারীদেরকে বলে দিন, তারা যেন পর পুরুষ হতে নিজেদের দৃষ্টি ফিরিয়ে রাখে
এবং নিজেদের গুপ্তাঙ্গের হেফাজত করে ও নিজেদের শোভা মণ্ডিত সাজ সজ্জা (পর পুরুষের
কাছে) প্রকাশ না করে।”
গুপ্তাঙ্গের
ব্যাখ্যায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন নারীদের সর্বাঙ্গ,
গুপ্তস্থান ও লজ্জার স্থান সৌন্দর্যপূর্ণ। যখন তারা বাইরে বের হয় তখন শয়তান
তাদের প্রতি পুরুষদের আকর্ষণ সৃষ্টি করে দেয়। আল্লাহ তায়া'লা অন্য এক আয়াতে
বলেন
بابها النبي قل لأزواجك وبنتك ويساء المؤمن بدبي عليهن من جلابيبهن
উচ্চারণঃ ইয়া
আইয়্যুহান্নাবিয়্যু কুল লিআযওয়া-জিকা ওয়া বানা-তিকা ওয়া নিসায়িল্ মু'মিনীনা
ইউনীনা আ'লাইহিন্না মিন্ জালাবীবিহিন্না।
অনুবাদঃ “হে নবী! আপনি
আপনার স্ত্রীদের, কন্যাদের ও মুমিন স্ত্রীলোকদের বলে দিন, তারা তাদের ওড়না
(চাঁদর) যেন নিজেদের উপর টেনে দেয়।” (সূরা আহযাব-৫৯)
অতএব কোরআন ও হাদীসের আলোকে প্রত্যেক নর-নারীর জন্য পর্দা করা ফরয। পরস্পরের প্রতি দৃষ্টি করা হারাম। নারীদের সর্বাঙ্গ ঢেকে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এমতাবস্থায় যারা উলঙ্গ বা অর্ধ উলঙ্গ অবস্থায় চলে এবং যারা সমর্থন করে তাদের মুসলমান দাবী করার কতখানি অধিকার আছে । তা সকলেই বুঝতে পারেন। অনেকে বলেন পর্দা করা না করা মনের ব্যাপার। মন ভাল থাকলে পর্দার দরকার হয় না। শরীয়তের আদেশ-নিষেধ মন ভাল-মন্দ নিয়ে বিচার হবে না। শরীয়তের হুকুম অনুযায়ী কাজ করতে হবে। মন যতই পরিষ্কার থাকুক না কেন তাতে চলবে না। কোরআন হাদীসের নিয়ম অনুযায়ী পর্দা করতে হবে।
সালাতুস তাসবীহ
দোয়া করার নিয়ম
হজ্জের ফরয, ওয়াজিব সুন্নাতসমূহ
হজ্জের গুরুত্ব ও ফযীলত-Hajjer Gurutto o Fajilat
বেসরকারিব্যবস্থাপনায় হজ করতে কত টাকা লাগবে?
এ বছর হজ করতে পারবেন ১০ লাখ
কোন দেশ থেকে কত মানুষ হজে যেতে পারবে
নামাজ ও যাকাত এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা
কুরবানীর ইতিহাস, তত্ত্ব, ফাযায়েল ও মাসায়েল
কোরবানীর ইতিহাস
ও ওয়াজিব হওয়ার শর্ত/Qurbani
কুরবানির পশু জবাইয়ের দোয়া ও পদ্ধতি
পশু যবেহ করার সময় বিশেষ লক্ষণীয় ও কর্তব্য
মহানবীকে স্বপ্নে দেখার উপায়-Mohanobi ke sopne dekhar amol
যে সময় দোয়া কবুল হয়-Je Somoy Dua Korle Kobol Hoy
ঈদের নামাজের
নিয়ত ও নিয়ম-Eider namajer niyot o niyom
আকিকার গোসত কতদিন খাওয়া যাবে-Akikar Mangso
আকীকা এবং কিছু ভ্রান্ত ধারণা/Akikar Niyom
নফল রোজার মাসআলা/Nafal Rojar Masala