Breaking

April 6, 2022

রোজা ভঙ্গের কারণসমুহ

রমজান মাসের গুরুত্ব সম্পর্কে মহান আল্লাহ কুরআন  পাকে এরশাদ করেন- "রমজান এমন একটি মহান মাস যাতে মানুষের হেদায়েত এবং হেদায়েত বিষয়ক প্রকাশ্য শিক্ষাপূর্ণ কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে যা সত্যকে মিথ্যা এবং খাটিকে ভেজাল হতে পার্থক্যকারী।"

প্রতিটি ভালো কাজের আলাদা আলাদা ফজিলত ও পুরস্কার রয়েছে। যার দ্বারা মহান রাব্বুল আলামিন কৃতকার্যকে পুরস্কৃত করবেন। কিন্তু রোজার ব্যাপারটা একেবারেই আলাদা। কেননা, রোজার একাধিক সওয়াব ছাড়াও এর ব্যাপারে অতুলনীয় ঘোষণা রয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মানুষের প্রতিটি আমল বৃদ্ধি পায়। একটি নেক আমল (সাওয়াব) ১০ গুণ থেকে (বিশেষ ক্ষেত্রে) ৭০০ গুণ বৃদ্ধি করা হয়। আল্লাহ তায়ালা বলেন, 'কিন্তু রোজার বিষয়টি ভিন্ন। কারণ রোজা আমার জন্য। তাই আমি নিজেই এর জন্য পুরস্কার প্রদান করব।


রোজা ভঙ্গের কারণসমুহ

ইসলামী শরিয়তে সিয়ামের শুদ্ধতা ও যথার্থতার জন্য নির্ধারিত কিছ বিধি-বিধান রয়েছে, যার ব্যতিক্রম ঘটলে রোজা ভঙ্গ হয়, অন্যথায় মাকরুহ হয়। রোজা বা সিয়াম ভঙ্গের কারণসমূহঃ

 

(১) ইচ্ছাকৃত পানাহার করলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়। অনুরূপ ধূমপান করলে অথবা চিনি-লবণ জাতীয় কোন বস্তু মুখে রাখার পর থুতু গিলে ফেললে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। তবে ভুলবশত কিছু খেয়ে নিলে অথবা জোরপূর্বক রোজাদারকে কেউ কিছু খেতে বাধ্য করলে রোজা ভঙ্গ হবে না।

 

(২) ইচ্ছাকৃত বমি করলে সিয়াম ভঙ্গ হয়ে যায়। তবে অনিচ্ছাকৃত বমির কারণে সিয়াম ভঙ্গ হবে না। যেমন মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন “যার অনিচ্ছাকৃত বমি আসে, তাকে সিয়াম কাযা করতে হবে না, আর যে ইচ্ছাকৃত বমি করে সে যেন তা কাযা করে।” (তিরমীজী, হাঃ ৭২০)

 

(৩) সিয়াম অবস্থায় স্ত্রী সহবাস করলে উক্ত রোজার কাযা করতে হবে এবং কাফফারা আদায় করতে হবে।

 

(৪) পানাহারের কাজ করে এমন ইঞ্জেকশন গ্রহণ করলেও রোজা ভঙ্গ হবে। ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে শরীরে জীবনীশক্তি বৃদ্ধি করার জন্য কিংবা অন্য কোন কারণে শরীরে ওষুধ প্রবেশ করানো হলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। শরীরের শক্তি বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে যেমন গ্লুকোজ জাতীয় ইঞ্জেকশন ব্যবহারে রোজা ভেঙ্গে যাবে। কারণ খাবার যে কাজ করে এক্ষেত্রে অনেকটা একই কাজ করে এটি। তবে শুধুমাত্র অপারগতায় চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ইনসুলিন, পেনিসিলিন জাতীয় ইঞ্জেকশকন নেওয়া হয় তাহলে রোজা ভঙ্গ হবে না।


(৫) মহিলাদের হায়েয বা নিফাস হলে অর্থাৎ মাসিক রক্তস্রাব শুরু হলে অথবা সন্তান প্রসব করলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে। পরবর্তীতে সমান সংখ্যক রোজা কাযা করে নিতে হবে।


(৬) মুখ খোলা রাখার কারণে বৃষ্টির পানি কন্ঠনালীতে প্রবেশ করলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়।


(৭) হস্তমৈথুন, আলিঙ্গন অথবা চুম্বনের মাধ্যমে বীর্যপাত হলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে। তবে স্বপ্নদোষ, রোগের কারণে বীর্যপাত হলে রোজা ভঙ্গ হবে না। কেননা এতে রোজাদারের কোন ইচ্ছা ছিল না।

(৮) দাতে আটকে থাকা ছোলা পরিমাণ বা তার চেয়ে বড় খাদ্যদ্রব্য গিলে ফেললে অথবা এর চেয়ে কম পরিমাণ মুখ থেকে বের করে পূণরায় গিলে ফেললে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে।

(৯) দাতের মাড়ি থেকে রক্ত বের হয়ে তা কন্ঠনালীতে পৌঁছালে এবং রক্তের স্বাদ অনুভূত হলে রোজা ভঙ্গ হয়ে ভাবে।

(১০) সাহরি গ্রহণের সময় রয়েছে মনে করে পানাহার করলে, কিন্তু দেখা গেল সুবহে সাদিক শেষ হয়ে গেছে সে রোজা হবে না।

(১১) কুলি করার সময় অসতর্কতার কারণে কন্ঠনালীতে পানি প্রবেশ করলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়।


আরো পড়তে পারেনঃ

রোজার গুরুত্ব

রোজা ভঙ্গের কারণসমুহ

রোজার মাকরুহসমূহ

রোজার কাফ্‌ফারা-র মাসায়েল

রোজার কাযার মাসায়েল

নফল রোজার মাসআলা/Nafal Rojar Masala

এতেকাফ-Etekaf-ইতেকাফ

এতেকাফ এর মাসাআলা/Etekaf er Masala/এতেকাফের শর্তসমূহ

যেসব কারণে এতেকাফ ফাসেদ তথা নষ্ট হয়ে যায় এবং কাযা করতে হয়

শবে কদর, এ'তেকাফ ও ফিতরা মাসআলা

শাওয়ালের ছয় রোজা

হজ্জের গুরুত্ব ও ফযীলত-Hajjer Gurutto o Fajilat

ঈদুল ফিতরের তাৎপর্য-EdulFitorer Tatporjo

সদকায়ে ফিতর/ফিতরা এর মাসায়েল/sadkaye fittor/fitara er masayel

নামাজ ও যাকাত এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

কুরবানীর ইতিহাস, তত্ত্ব, ফাযায়েল ও মাসায়েল

লাইলাতুল কদরের ফজিলত

৫ টি কথায় সকল চাওয়া/ যেসব আমলে দ্রুত দোয়া কবুল হয়

তওবার নামাজ কিভাবে পড়তে হয়

ইবাদত কবূল হওয়ার শর্তাবলী ১ম পর্ব

ইসলাম ও ঈমানের দাওয়াত

নামাযের প্রয়োজনীয়দোয়াসমূহ

মহিলাদের যাদের সাথে দেখা দেয়া জায়েয

মহিলাদের পোশাক পরিচ্ছদ

নামাজের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা এবং নামাজ সম্পর্কে ঘটনা পর্ব ১

নামাজের প্রকারভেদ/ Foroj-Wajib-Sunnat-Nofol Namaj

ইসলামে মেহমানদারির গুরুত্ব ও বিধান/Mehomandari

ইসলামে প্রতিবেশীর অধিকার পর্ব ১

Popular Posts