জুমুয়ার
ফযীলত
জুমুয়ার ফযীলত লাভের
উদ্দেশ্যে বৃহস্পতিবার থেকে তৎপর হওয়া উচিত। সে মতে (বৃহস্পতিবার) আসরের পর দোয়া
ইস্তেগফার ও তাসবীহ পাঠে মশগুল হবে। কেননা, এ সময়টি জুমুয়ার সমান ফযীলত রাখে।
জনৈক বযুর্গ বলেন, “আল্লাহ্
তায়ালার কাছে মানুষের জীবিকা ছাড়া আরেকটি অনুগ্রহ আছে যা থেকে তিনি তাকে দেন, যে
তাঁর কাছে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এবং জুমুয়ার দিন তা তালাশ করে।”
বৃস্পতিবার দিন জুমুয়ার
দিনে রোযা রাখার নিয়ত করবে, এর অনেক সওয়াব। কিন্তু এর সাথে বৃহস্পতিবার অথবা
শনিবারের রোযা মিলিয়ে নিবে। কেননা, শুধু জুমুয়ার দিন রোযা রাখা মাকরুহ। এই রাতটি
নামায ও কোরআন তেলাওয়াতে অতিবাহিত করা খুবই সওয়াবের কাজ। কোনো কোনো বুযুর্গ এ রাতে
স্ত্রীসহবাস মুস্তাহাব বলেছেন। হাদীসে এসেছে, আল্লাহ্ রহম করুন সে ব্যক্তির প্রতি,
যে প্রথম ওয়াক্তে জুমুয়াতে আসে, শুরু থেকে খোতবা শুনে এবং গোসল করায় ও গোসল করে।
এখানে গোসল করায় অর্থ স্ত্রীকে গোসল করায়। এসব কাজ করলে পূর্ণরূপে জুমুয়াকে স্বাগত
জানানো হবে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি গাফেলদের স্তর থেকে আলাদা হয়ে যাবে, জনৈক
বুযুর্গ বলেন, জুমুয়ার পূর্ণ অংশ সেই পায় যে একদিন আগে থেকে এর অপেক্ষা করে। আর
ক্ষুদ্র অংশ সে ব্যক্তি পায়, যে সকালে জিজ্ঞেস করে আজ কোন দিন? অতীত কালের বহু
বুযুর্গ ব্যক্তি জুমুয়ার পূর্ব রাতে জামে মসজিদেই থাকতেন।
সম্পর্কিত পোষ্ট
জুমুয়ার নামায পড়ার নিয়ত/Jumuwar
namaz poṛar
niyot
নামাযের প্রয়োজনীয় দোয়াসমূহ
নামাজ বা সালাত আদায়ের নিয়ম-Namaj Adayer Niyom
আল-হামদুলিল্লাহ্!
বর্তমান এই ফেতনার যুগে ইসলামি দুনিয়ায় বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত ও আরবসহ সকল
মুসলিম ও অমুসলিম দেশে দাওয়াতে মারকাজ ও দ্বীনদার ঈমানদার শব গোযারী করছেন। সমগ্র
মুসলিম জাহানের তাবলীগের মারকাজ মসজিদগুলোতে বৃহস্পতিবার আসরের নামাযের আগে থেকেই
হাজার হাজার মুসলমান হাজির হচ্ছেন। প্রত্যেকেরই উদ্দেশ্য, বৃহস্পতিবার আসরের সময়
হতে শুক্রবার রাত জেগে আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করা। নফল নামায ও কোরআন তেলাওয়াতে
বেশির ভাগ সময় ব্যয় করা। এটা এক স্থায়ী সাপ্তাহিক আমল হিসেবে বিশ্বামুসলিম পালন
করে আসছেন।
জুমুয়ার দিন গোসল করা
মুস্তশহাব। কোনো কোনো বুযুর্গ আলেম একে ওয়াজিব বলেছেন। নবী করীম (সা.)-এর এক
হাদীসে আছে, যে জুমুয়ায় উপস্থিত হয় তার গোসল করা উচিত। মদীনার মুসলমানরা কাউকে
মন্দ বলার ক্ষেত্রে এরূপ বলত, তুমি তার চেয়েও খারাপ যে জুমুয়ার দিনে গোসল করে না।
(এহইয়াউ উলুমুদ্দীন)
শুক্রবার দিন সাজসজ্জা
করা মুস্তাহাব। তিনটি বিষয় সাজসজ্জায় দলভুক্ত পোশাক, পরিচ্ছন্নতা ও সুগন্ধি
ব্যবহার করা। পরিচ্ছন্নতার মধ্যে রয়েছে মেসওয়াক করা, চুল কাটা, নখ কাটা ও গোঁফ
কাটা। এ ছাড়া পবিত্রতার অধ্যায়ে যে সব বিষয় বর্ণিত হয়েছে সেগুলোও করা উচিত।
হযরত ইবনে মাসউদ (রা.)
বলেন, যে ব্যক্তি জুমুয়ার দিন নখ কাটে আল্লাহ্ তায়ালা তার নখ থেকে রোগ দূর করে
দেন। নিজের কাছে যে উৎকৃষ্ট সুগন্ধি থাকে তা জুমুআর দিন ব্যবহার করবে যাতে দুর্গন্ধ
দূর হয় এবং উপস্থিত মুসল্লীরা আরাম বোধ করে। পুরুষদের জন্য উত্তম সুগন্ধি হচ্ছে
যার ঘ্রাণ কড়া এবং রং অস্পষ্ট। অপর দিকে নারীদের জন্য সেই সুগন্ধি উত্তম যার রং
উজ্জ্বল এবং গন্ধ গোপন।
ইমাম শাফেয়ী (রহ.) বলেন,
যে ব্যক্তি তার কাপড়-চোপড় পরিষ্কার রাখে তার মনঃকষ্ট কম হয় এবং যার সুগন্ধি
উৎকৃষ্ট তার বুদ্ধি বাড়ে সাদা পোশাকের দিকে তাকানো মাকরূহ। জুমুয়ার দিন পাগড়ি
পরিধান করা মুস্তহাব। এক হাদীসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর ফেরেশতাগণ জুমুআর দিন পাগড়ি পরিধানকারীদের প্রতি রহমত প্রেরণ
করেন। সুতরাং গরমে কষ্ট হলে নামাযের আগে ও পরে পাগড়ি খুলে নেয়াতে দোষ নেই।
নবী করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তিনটি কাজের সওয়াব যদি মানুষ জানত তবে সেগুলোর জন্য সওয়ারীতে
বসে রওনা হয়ে যেত।
(১) আযান,
(২) জামায়াতের প্রথম সারি
এবং
(৩) জুমুআর নামাযের জন্য
মসজিদে যাওয়া।
আরও পড়ুনঃ
সালাতুস তাসবীহ
দোয়া করার নিয়ম
৫ টি কথায় সকল চাওয়া/ যেসব আমলে দ্রুত দোয়া কবুল হয়
তওবা কবুল হওয়ার শর্ত/Taoba Kobul Hoyar Sorto
এক হাদীসে আছে, জুমুয়ার
দিন ফেরেশতারা হাতে রূপার কাগজ ও স্বর্ণের কলম নিয়ে জামে মসজিদের দরজাসমূহে বসে যায়
এবং প্রথম ও দ্বিতীয় প্রহরে আগমনকারীদের নাম লিপিবদ্ধ করে।
এক হাদীসে আছে, যখন কোনো
বান্দা জুমুয়ার দিনে দেরি করে তখন ফেরেশতারা তাকে তালাশ করে এবং তার অবস্থা একে
অপরের কাছে জিজ্ঞেস করে। তারা বলে, ইলাহী। যদি দারিদ্র্যের কারণে তার দেরি হয়ে
থাকে তবে তাকে ধনাঢ্য কর। রোগের কারণে দেরি হয়ে থাকলে তাকে সুস্থতা দান কর। কাজে
ব্যস্ত থাকার কারণে দেরি হলে তাকে অবসর দান কর। কোনো খেলার কারণে দেরি হয়ে থাকলে
তার অন্তরকে ইবাদতের দিকে দাও।
ইমাম যখন মিম্বরে যান তখন
নামায বন্ধ করতে হবে এবং কথাবার্তাও বন্ধ করতে হবে। এ সময় খোতবা শুনতে হবে। কেনো
কোনে লোকের অভ্যাস মোয়াযযিন আযান দিতে উঠলে তারা সেজদা করে। হাদীসের বর্ণনা মতে এর
কোন ভিত্তি নেই। হযরত আলী ও হযরত উসমান (রা.) হতে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি চুপচাপ
খোতবা শুনে তার জন্য এক সওয়াব এবং যে শুনে এবং বাজেকথা বলে তার জন্য এক গোনাহ্
লেখা হয়।
রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ইমাম খোতবা পাঠ করার সময় যে ব্যক্তি সঙ্গীকে বলে চুপ থাক,
সে বাজে কথা বলে। আর যে বাজে কথা বলে তার জুময়া হয় না। এ রেওয়ায়েত থেকে জানা গেল
যে, ইশারা করে অথবা কংকর নিক্ষেপ করে চুপ করাতে হবে কথা বলে নয়।
হযরত আবু যর গেফারী বলেন,
রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন খোতবা পাঠ করছিলেন, তখন আমি হযরত
উবাই ইবনে কা'ব (রা)- কে প্রশ্ন করলাম এই সূরা কবে নাযিল হয়েছিল? হযরত উবাই আমাকে
চুপ থাকতে ইশারা করলেন। এরপর রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বর
থেকে নামার পর উবাই আমাকে বললেন যাও, তোমার জুমুয়া নেই। আমি রাসূলে করীম
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে অভিযোগ পেশ করলাম। তিনি বললেন, উবাই ঠিক
বলেছে। যে ব্যক্তি দূরে বসার কারণে খোবা শুনতে অক্ষম তার চুপ থাকা উচিত। হযরত আলী
(রা) বলেন, চার সময়ে নামায মাকরূহ
(১) ফজরের পর,
(২) আসরের পর,
(৩) ঠিক দুপুরে এবং
(৪) ইমাম যখন খোতবা দেন।
জুমুয়া শেষে আসরের নামায
পর্যন্ত মসজিদে থাকা উচিত। মাগরিব পর্যন্ত থাকলে আরো ভালো। বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি
জামে মসজিদে আসরের নামায পড়ে সে হজ্জের সওয়াব পায় এবং সে মাগরিবের নামায ও পড়ে
সে হজ্জ ও উমাহর সওয়াব পায়। যদি রিয়ার আশঙ্কা থাকে অথবা মসজিদে অনর্থক কতাবার্তায়
মশগুল হওয়ার ভয় হয়, তাহলে আল্লাহর যিকির করতে করতে এবং তার নেয়ামতের কথা ভাবতে
ভাবতে গৃহে ফিরে আসাই উত্তম। এরপর সূর্যাস্ত পর্যন্ত অন্তর ও মুখের হেফাযত করবে,
যাতে জুমুয়ার দিনে উত্তম মুহূর্তটি নষ্ট না হয়। জামে মসজিদে পাগোনা মসজিদে দুনিয়াবী
কথাবার্তা বলা উচিত নয়।
রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন এমন সবেঃ যখন মানুষ মসজিদসমূহ দুনিয়ার কথাবার্তা বলবে।
তাদের সাথে আল্লাহ্ তায়ালার কোনো সম্পর্ক নেই তুমি তাদের কাছে বসো না।
আরো পড়তে পারেনঃ
হজ্জের ফরয, ওয়াজিব সুন্নাতসমূহ
হজ্জের গুরুত্ব ও ফযীলত-Hajjer Gurutto o Fajilat
বেসরকারিব্যবস্থাপনায় হজ করতে কত টাকা লাগবে?
কোন দেশ থেকে কত মানুষ হজে যেতে পারবে
নামাজ ও যাকাত এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা
কুরবানীর ইতিহাস, তত্ত্ব, ফাযায়েল ও মাসায়েল
কোরবানীর ইতিহাস ও ওয়াজিব হওয়ার শর্ত/Qurbani
কুরবানির পশু জবাইয়ের দোয়া ও পদ্ধতি
পশু যবেহ করার সময় বিশেষ লক্ষণীয় ও কর্তব্য
মহানবীকে স্বপ্নে দেখার উপায়-Mohanobi ke sopne dekhar amol
যে সময় দোয়া কবুল হয়-Je Somoy Dua Korle Kobol Hoy
ঈদের নামাজের নিয়ত ও নিয়ম-Eider namajer niyot o niyom
আকিকার গোসত কতদিন খাওয়া যাবে-Akikar Mangso
আকীকা এবং কিছু ভ্রান্ত ধারণা/Akikar Niyom
নফল রোজার মাসআলা/Nafal Rojar Masala
ইবাদত কবূল হওয়ার শর্তাবলী ১ম পর্ব
সূরা ফাতিহার শানে নুযূল/ Sura Fatihar Sane Nuzul
সূরা ফাতিহার বৈশিষ্ট্য ও ফজিলত/Sura Fatihar Fojilot
কবিরা গুনাহসমূহ/Kobira Gunahasomuh
পাঁচ কালেমা আরবি ও বাংলা অর্থসহ উচ্চারণ/5 Kalema
প্রস্রাব-পায়খানা করার নিয়ম/Prosrab-paykhana korar niyom
ঢিলা-কুলুখ ব্যবহারের নিয়ম/Ḍhila-kulukh beboharer niyom
কাযা নামায পড়ার নিয়ম/Kaja Namaz Porar Niyom
প্রথম কাতারে নামায পড়ার ফযীলত/Protom Katare Namaz Porar Fojiot
সাহু সিজদাহ করার নিয়ম/Sahu Sijdah Korar Niyom
নামায অবস্থায় অযূ ভঙ্গ হলে করণীয়