Breaking

May 13, 2022

কুরবানির পশু জবাইয়ের দোয়া ও পদ্ধতি/Kurbanir pasu jabaiyer doya o poddoti

কুরবানী করার নিয়মাবলী

 

পবিত্র হাদীস গ্রন্থে হযরত রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম থেকে ইরশাদ হয়েছে যে, যার কোরবানী করার ক্ষমতা আছে অথচ সে কোরবানী না করে তবে সে যেন আমার ঈদগাহে না আসে। (ইবনে মাজাহ, হা ৩১২৩)

এই হাদীস থেকেই প্রমাণ হয় যে, মুসলমান ছাহেবে নেসাব নর-নারীর উপর কোরবানী করা একান্তভাবে কর্তব্য বা ওয়াজিব।

সম্পর্কিত পোস্টঃ

কুরবানীর ইতিহাস, তত্ত্ব, ফাযায়েল ও মাসায়েল

কোরবানীর ইতিহাস ও ওয়াজিব হওয়ার শর্ত/Qurbani

কুরবানী দাতা দশই যিলহজ্ব তারিখের সূর্যোদয়ের পর থেকে ১২ই যিলহজ্বের সূর্য অস্তের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত পরিবারের প্রাপ্ত বয়স্ক নর-নারীর উপর (যদি তিনি ছাহেবে নেসাব হন) কোরবানী করা ওয়াজিব। এছাড়া যদি পরিবারের সকলের পক্ষ থেকে অর্থাৎ প্রতিটি সদস্যের পক্ষ থেকে কোরবানী করা যায়, তাতে অনেক সওয়ার পাওয়া যাবে।

ঈদুল আজ্বহার নামায শেষে নিম্নলিখিত দোয়া পাঠ করে কোরবানীর পশু যবেহ করতে হয়। পশু যবেহের সময় পশুকে দক্ষিণ দিকে মাথা দিয়ে পশ্চিমমুখী বা কেবলামুখী করে শোয়াবে পশুর কণ্ঠের উপর ছুরি বা ধারালো কোন অস্ত্র দ্বারা যবহের কাজ যত দ্রুত সম্ভব সমাপ্ত করবে যাতে কোরবানীর পশু কষ্ট কম পায়। ভোতা চুরি বা অস্ত্র দিয়ে যবেহ করা মাকরূহ। আর নিজের কুরবানির পশু নিজেই জবাই করা মুস্তাহাব। যদি নিজের দ্বারা জবাই সম্ভব না হয় তবে অন্যের দ্বারা জবাই করানো। এক্ষেত্রে জবাইয়ের সময় কুরবানি দাতা সামনে থাকা উত্তম। কোরবানির পশু জবাইয়ের নিয়ম ও দোয়া তুলে ধরা হলো-

জবাই করার পদ্ধতি

জবাই করার সময় পশু ক্বিবলামুখী করে শোয়ানো। অতঃপর বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলে জবাই করা। ইচ্ছাকৃতভাবে বিসমিল্লাহ বলা পরিত্যাগ করলে জবাইকৃত পশু হারাম বলে গণ্য হবে। আর যদি ভুলবশত বিসমিল্লাহ ছেড়ে দেয় তবে তা খাওয়া বৈধ।

জবাই করার সময় কণ্ঠনালী, খাদ্যনালী, এবং উভয় পাশের দুটি রগ অর্থাৎ মোট চারটি রগ কাটা জরুরি। কমপক্ষে যদি তিনটি রগ কাটা হয় তবে কোরবানি শুদ্ধ হবে। কিন্তু যদি দু'টি রগ কাটা হয় তবে কোরবানি দুরস্ত হবে না। (হিদায়া)

 

জবাই করার সময় ছুরি ভালভাবে ধার দিয়ে নেয়া, যাতে জবাইয়ের সময় পশুর অপ্রয়োজনীয় কষ্ট না হয়। যেমন- এক ছুরি দিয়ে জবাই শুরু করে চামড়া কিছু কাটার পর আর না কাটা অতঃপর আবার ছুরি পরিবর্তন করে জবাই করা ইত্যাদি।

কোনো ব্যক্তি জবাই করার সময় জবাইকারীর ছুরি চালানোর জন্য সাহায্য করে, তবে তারও বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলা।

কুরবানির পশু জবেহের দোয়া

 

إني وجهت وجهي للذي فطر السموات والأرض حنيفا وما أنا من المشركين إن صلاتي ونسكي ومحياي ومماتي يله رب العالمين لا شريك له وبذلك أمرت وأنا من المسلمين اللهم منك ولك

উচ্চারণঃ ইন্নি ওয়াঝঝাহতু ওয়াঝহিয়া লিল্লাজি ফাতারাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদা হানিফাও ওয়া মা আনা মিনাল মুশরিকিন। ইন্না সালাতি ওয়া নুসুকি ওয়া মাহইয়ায়া ওয়া মামাতি লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। লা শারিকা লাহু ওয়া বি-জালিকা উমিরতু ওয়া আনা মিনাল মুসলিমিন। আল্লাহুম্মা মিনকা ওয়া লাকা।

 

অর্থঃ নিশ্চয়ই আমি দৃঢ়ভাবে সেই মহান সত্তার অভিমুখী হলাম, যিনি আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন। আমি মুশরিকদের অন্তর্গত নই। নিশ্চয়ই আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন ও আমার মরণ, সবই বিশ্ব প্রতিপালক মহান আল্লাহর জন্য নিবেদিত। তাঁর কোনো শরিক নেই। আমি এ কাজের জন্য আদিষ্ট হয়েছি। আর আমি আত্মসমর্পণকারীদের একজন। হে আল্লাহ! তোমার পক্ষ থেকে, তোমার জন্য। (আবু দাউদ, হাঃ ২৭৯৫)

বিঃদ্রঃ কুরবানির পশু জবাই করার সময় মুখে (উচ্চস্বরে) নিয়ত করা জরুরি নয়। অবশ্য মনে মনে এ নিয়ত করা যে, আমি আল্লাহর উদ্দেশে কুরবানি আদায় করছি। তবে মুখে দোয়া পড়া উত্তম। কুরবানির পশু ক্বিবলার দিকে শোয়ানোর পর ওপরোক্ত দোয়া পাঠ করা।

অতঃপর বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলে কুরবানির পশু জবাই করা। কোরবানির পশু জবাই করে এ দোয়া পড়া-

اللهم تقبله منى كما تقبلت من حبيبك محمد وخليلك إبراهيم عليهم الصلاة والسلام.

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা তাকাব্বালহু মিন্নী কামা তাকাব্বালতা মিন হাবিবিকা মুহাম্মাদিও ওয়া খালিলিকা ইবরাহিমা আলাইহিমাস সালাতা ওয়াস সালাম।

অর্থঃ হে আল্লাহ! তুমি এ কুরবানী কবুল কর, যেমনিভাবে তোমার হাবীব মুহাম্মদ (সাঃ) এবং তোমার দোস্ত ইব্রাহীম (আঃ) এর পক্ষ হতে (কুরবানী) কবুল করেছিলে।

 

লক্ষ্যণীয় হলো- যদি নিজের (যবেহকারী) কুরবানী হয়, তবে তাঁর মিন্নী বলতে হবে। আর যদি অন্যের কুরবানী হয়, মিন্নী শব্দের পরিবর্তে মিন শব্দ বলার পর যার বা যাদের কুরবানী, তার বা তাদের নাম উল্লেখ করতে হবে। আর যদি যবেহকারী অন্যের সাথে শরীক হয়, তাহলে তাঁর মিন্নী ও বলবে, অতঃপর মিন বলে শরীকদের নাম বলতে হবে।

 

উল্লেখ্য, শুধু বিসমিল্লাহি ওয়াল্লাহু আকবার' পড়ে পশু জবাই করলেও কোরবানি সহিহ হয়ে যায়। (আবু দাউদ, হাঃ ২৮১০)

 

কারণ নিয়ত অন্তরের সাথে সম্পর্কযুক্ত। তবে অবশ্যই প্রত্যেক যবেহকারীর উচিত উপরোক্ত দোয়া শিক্ষা করা। কেননা উপরোক্ত দোয়া পাঠ করে কুরবানী করা সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত।

 

আরো পড়তে পারেনঃ

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ত

নামাযের প্রয়োজনীয় দোয়াসমূহ

নামাজ বা সালাত আদায়ের নিয়ম-Namaj Adayer Niyom

৫ টি কথায় সকল চাওয়া/ যেসব আমলে দ্রুত দোয়া কবুল হয়

তওবা কবুল হওয়ার শর্ত/Taoba Kobul Hoyar Sorto

সালাতুস তাসবীহ

দোয়া করার নিয়ম

শাওয়ালের ছয় রোজা

হজ্জের গুরুত্ব ও ফযীলত-Hajjer Gurutto o Fajilat

ঈদুল ফিতরের তাৎপর্য-EdulFitorer Tatporjo

সদকায়ে ফিতর/ফিতরা এর মাসায়েল/sadkaye fittor

নামাজ ও যাকাত এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

মহানবীকে স্বপ্নে দেখার উপায়-Mohanobi ke sopne dekhar amol

যে সময় দোয়া কবুল হয়-Je Somoy Dua Korle Kobol Hoy

ঈদের নামাজের নিয়ত ও নিয়ম-Eider namajer niyot o niyom

আকিকার গোসত কতদিন খাওয়া যাবে-Akikar Mangso

আকীকা এবং কিছু ভ্রান্ত ধারণা/Akikar Niyom

রোজা ভঙ্গের কারণসমুহ

রোজার মাকরুহসমূহ

রোজার কাফ্‌ফারা-র মাসায়েল

রোজার কাযার মাসায়েল

নফল রোজার মাসআলা/Nafal Rojar Masala

এতেকাফ-Etekaf-ইতেকাফ

এতেকাফ এর মাসাআলা/Etekaf er Masala/এতেকাফের শর্তসমূহ

শবে কদর, এ'তেকাফ ও ফিতরা মাসআলা

লাইলাতুল কদরের ফজিলত

তওবার নামাজ কিভাবে পড়তে হয়

ইবাদত কবূল হওয়ার শর্তাবলী ১ম পর্ব

ইসলাম ও ঈমানের দাওয়াত

সূরা ফাতিহা/Surah Fatiha

সূরা ফাতিহার শানে নুযূল/ Sura Fatihar Sane Nuzul

সূরা ফাতিহার বৈশিষ্ট্য ও ফজিলত/Sura Fatihar Fojilot

Popular Posts