Breaking

April 14, 2022

এতেকাফ-Etekaf-ইতেকাফ

দুনিয়ার সকল আকর্ষণ থেকে মুক্ত হয়ে, সকল মায়া ত্যাগ করে, সকল বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে মহান আল্লাহর সান্নিধ্যে যাওয়ার নামই ইতিকাফ। 

ইতিকাফ শব্দের আভিধানিক অর্থ স্থির থাকা, আবদ্ধ হওয়া, অবস্থান করা। শরীয়তের পরিভাষায় সওয়াব লাভের উদ্দেশ্যে দুনিয়া ও পারলৌকিক যাবতীয় যোগাযোগ ত্যাগ করে মসজিদে অবস্থান করাকে ইতিকাফ বলে।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, আমি ইব্রাহিম ও ইসমাঈলকে নির্দেশ দিয়েছিলাম, আমার ঘরকে তাওয়াফ, ইতিকাফ এবং রুকু-সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র রাখ। (সূরা-২ বাকারা, আয়াত: ১২৫)। আম্মাজান হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ (সা.) রমজান মাসের শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন। তার মৃত্যুর পরও তার স্ত্রীগণ (বাড়িতে) ইতিকাফ করতেন। (বুখারি ও মুসলিম; আলফিয়াত আল-হাদিস: 546, পৃষ্ঠা: 129)।

ইতিকাফ একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন ইবাদত। রমজানের শেষ দশকে অর্থাৎ ২০ রমজান সূর্যাস্তের আগে ঈদের চাঁদ দেখা যায় অর্থাৎ শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায় বা ৩০ রমজান শেষ হওয়ার পর ওই দিন সূর্যাস্ত পর্যন্ত ইতিকাফ করা হয়। কয়েক জন বা একজন মসজিদে ইতিকাফ করলে সবাই দায় থেকে অব্যাহতি পাবে। আর যদি কেউ তা না করে তবে সুন্নত তরকের জন্য সবাই দায়ী। তবে আদায়ের ক্ষেত্রে যিনি বা যারা আদায় করবেন, কেবল তিনি বা তারাই সওয়াবের অধিকারী হবেন।


 এ’তেকাফের অবস্থায় যেসব জিনিস মাকরূহ-

১।এ’তেকাফ অবস্থায় চুপ থাকলে ছওয়াব হয় এই মনে করে চুপ থাকা মাকরূহ তাহরীমী।

২।বিনা জরূরতে দুনিয়াবী কাজে লিপ্ত হওয়া মাকরূহ তাহরীমী।যেমন-

ক্রয় বিক্রয় করা ইত্যাদি। তবে নেহায়েত জরূরত হলে যেমন-

ঘরে খোরাকী নেই এবং সে ব্যতীত কোনো বিশ্বস্ত লোকও নেই- এরূপ অবস্থায় মসজিদে মাল পত্র উপস্থিত  না করে কেনা-বেচার চুক্তি করতে পারে।

 

এ’তেকাফের মোস্তাহাব ও আদবসমূহ

 

১।এতেকাফের জন্য সর্বোত্তম মসজিদ নির্বাচন করবে। সর্বোত্তম মসজিদ হল মসজিদুল হারাম, তারপর মসজিদে নববী, তারপর বায়তুল মুকাদ্দাস, তারপর যে মসজিদে জামাআতের এন্তেজাম আছে, এরপর মহল্লার মসজিদ, তারপর যে মসজিদে বড় জামাআত হয়।

২।নেক কথা ব্যতীত অন্য কথা না বলা।

৩।বেকার বসে না থেকে নফল নামাজ, তিলাওয়াত, তাসবীহ-তাহলীলে মশগুল থাকা উত্তম।

৪।এতেকাফে খাস কোন ইবাদত করা শর্ত নয়- যে কোন নফল নামাজ, যিকির-কাযকার, তিলাওয়াত, দ্বীনী কিতাব পড়া, পড়ানো বা যে ইবাদত চায় করতে পারে।

৫।এতেকাফ শুরু করার পর নিজের বা অন্যের জীবন বাঁচানোর তাগিদে অনন্যোপায় অবস্থায় এতেকাফের স্থান থেকে বের হলে গোনাহ নেই বরং তা জরুরী, তবে তাতে এতেকাফ ভেঙ্গে যাবে।

৬।কোন শরীয়াতসম্মত প্রয়োজনে বা স্বাভাবিক প্রয়োজনে বের হলে ইত্যবসরে কোন রোগী দেখলে বা জানাযায় শরীক হলে তাতে কোন দোষ নেই।

৭।পারিশ্রমিকের বিনিময়ে এতেকাফে বসা অথবা বসানো উভয়টা না-জায়েয ও গোনাহ।

৮।মহিলাদের জন্য মসজিদে এতেকাফ করা মাকরূহ তাহরীমী। তারা ঘরে এতেকাফ করবে। স্বামী মওজুদ থাকলে এতেকাফের জন্য স্বামীর অনুমতি গ্রহণ করতে হবে। স্বামীর খেদমতের প্রয়োজন থাকলে এতেকাফে বসবে না। শিশুর তত্ত্বাবধান ও যুবতী কন্যার প্রতি খেয়াল রাখার প্রয়োজন থাকলে এতেকাফে না বসাই সমীচীন। মহিলাগণ নির্দিষ্ট কোন কামরায় বা ঘরের কোণে এক স্থানে পর্দা করে এতেকাফে বসবে। মহিলাদের জন্য এতেকাফের অন্যান্য মাসায়েল পুরুষের ন্যায়।

আরো পড়তে পারেনঃ

রোজার গুরুত্ব

রোজা ভঙ্গের কারণসমুহ

রোজার মাকরুহসমূহ

রোজার কাফ্‌ফারা-র মাসায়েল

রোজার কাযার মাসায়েল

নফল রোজার মাসআলা/Nafal Rojar Masala

এতেকাফ-Etekaf-ইতেকাফ

এতেকাফ এর মাসাআলা/Etekaf er Masala/এতেকাফের শর্তসমূহ

যেসব কারণে এতেকাফ ফাসেদ তথা নষ্ট হয়ে যায় এবং কাযা করতে হয়

শবে কদর, এ'তেকাফ ও ফিতরা মাসআলা

শাওয়ালের ছয় রোজা

হজ্জের গুরুত্ব ও ফযীলত-Hajjer Gurutto o Fajilat

ঈদুল ফিতরের তাৎপর্য-EdulFitorer Tatporjo

সদকায়ে ফিতর/ফিতরা এর মাসায়েল/sadkaye fittor/fitara er masayel

নামাজ ও যাকাত এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

কুরবানীর ইতিহাস, তত্ত্ব, ফাযায়েল ও মাসায়েল

লাইলাতুল কদরের ফজিলত

৫ টি কথায় সকল চাওয়া/ যেসব আমলে দ্রুত দোয়া কবুল হয়

তওবার নামাজ কিভাবে পড়তে হয়

ইবাদত কবূল হওয়ার শর্তাবলী ১ম পর্ব

ইসলাম ও ঈমানের দাওয়াত

নামাযের প্রয়োজনীয়দোয়াসমূহ

মহিলাদের যাদের সাথে দেখা দেয়া জায়েয

মহিলাদের পোশাক পরিচ্ছদ

নামাজের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা এবং নামাজ সম্পর্কে ঘটনা পর্ব ১

নামাজের প্রকারভেদ/ Foroj-Wajib-Sunnat-Nofol Namaj

ইসলামে মেহমানদারির গুরুত্ব ও বিধান/Mehomandari

ইসলামে প্রতিবেশীর অধিকার পর্ব ১

ফকির মিসকীনের হক বা অধিকার/Fokir Miskiner Odhikar

Popular Posts