ঈদের নামাযের ফজীলত
হযরত
রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় হিজরত করে যেয়ে দেখতে পান,
মদীনায় তখন ফারসিদের প্রভাবে শরতের পূর্ণিমায় 'নওরোজ উৎসব' এবং বসন্তের
পূর্ণিমায় 'মেহেরজান উৎসব' উদযাপিত হয়ে থাকে। এ দুইটি বিজাতীয় উৎসবের রীতিনীতি
ইসলামি রীতিনীতির পরিপন্থী ছিল বলে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
মুসলমানদেরকে এতে যোগদান হতে বিরত থাকার নির্দেশ দেন এবং তদস্থলে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল
আযহা- এ দুইটি উৎসব পালনের রীতি প্রবর্তন করেন।
ইসলামের
কোন কাজই তাৎপর্যহীন ও সওয়াব শূন্য নয়। এ জন্যই মুসলমানরা আনন্দোৎসব পালনের সাথে
সাথে এ রকম ইবাদতের মাধ্যমে অশেষ পূণ্যও হাসিল করে থাকে। আল্লাহ তায়ালার মহান
দরবারে সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ করার নামই ইসলাম। আর তাঁর 'তাওহীদ' বা একত্বের
স্বীকৃতিরই ইসলাম ধর্মের মূলকথা। মু'মিন ব্যক্তির আকীদায় আল্লাহ তায়ালা
সর্বশক্তিমান ও সদা বিরাজমান। এ বিষয়ের আন্তরিক বিশ্বাস,
মৌখিক স্বীকৃতি এবং
কার্যতঃ এটার অনুষ্ঠান- এ তিনটি উপাদানের সমাবেশে ঈমান পরিপূর্ণতা লাভ করে।
কেবলমাত্র বিশ্বাস অথবা শুধুমাত্র মৌখিক স্বীকৃতির ফলে কেউ খাঁটি মু'মিন বা
সত্যিকার মুসলমান হওয়া যায়। দীর্ঘ এক মাস কাল রোযা পালনের মাধ্যমে মুসলমান
বিশ্বাসের স্বীকৃতি ও কার্যতঃ প্রমাণ নিয়ে থাকে। তৎসঙ্গে খোদা-প্রীতি,
ধর্মনিষ্ঠা, সংযম ও সাধনার পরিচয়ও দিয়ে থাকে। এভাবে ঈদের দিনে মুসলিম-জীবনের
বিশ্বাস ও সাধনার বিজয় ঘোষিত হয়ে থাকে।
আরো পড়তে পারেনঃ
নামাযের প্রয়োজনীয় দোয়াসমূহ
নামাজ বা সালাত আদায়ের নিয়ম-Namaj
Adayer Niyom
৫ টি কথায় সকল চাওয়া/ যেসব আমলে দ্রুত দোয়া কবুল হয়
সালাতুস তাসবীহ
দোয়া করার নিয়ম
ঈদের দিন
ও ঈদের রাত্রির ফজিলত অপরিসীম। হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে
পাঁচটি রাত্রিতে দোয়া কবুল হওয়ার কথা বলেছেন, ঈদুল ফিতরের রাত্রিটি এদের অন্যতম।
হযরত নবী করীম
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “প্রত্যেক জাতিরই খুশির দিন থাকে, আর
আমাদের খুশির দিন হলো- ঈদুল ফিতরের দিন।” (বোখারী ও মুসলিম)
অপর এক হাদীসে আছে, “যে
ব্যক্তি দুই ঈদের রাত দুইটিতে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ ও নেকী অর্জনের নিয়তে জেগে
ইবাদতে কাটাবে, সেদিন তার অন্তর মরবে না, যেদিন সব অন্তর মৃত থাকবে। (অর্থাৎ
কিয়ামতের বিভীষিকা দেখে যখন সকলে ভীত-সন্ত্রস্ত ও ব্যাকুল হয়ে পড়বে, তখন ঐ
ব্যক্তি সম্পূর্ণ নির্ভয় মধ্যে সময় অতিবাহিত করবে। (ইবনে মাজা, তারগীব)
হযরত
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন, 'ঈদুল ফিতরের দিন উপস্থিত হলে,
আল্লাহ তায়ালা মুসলমান রোজাদারদের বিষয়ে ফেরেশতাদের কাছে গৌরব করে থাকেন। তিনি
ফেরেশতাদের জিজ্ঞেস করেন হে ফেরেশতারা। কারো উপর কোনো কাজের দায়িত্ব দেয়া হলে সে
যদি পুরাপুরিভাবে তা পালন করে, তবে তাকে কিরূপ প্রতিদান দেয়া উচিত? ফেরেশতারা
বলেন, “তাকে এটার পুরাপুরি পারিশ্রমিক দেয়া উচিত।
তখন
আল্লাহ তায়ালা বলেন, “আমি আমার বান্দা ও বান্দীগণের উপর যে কাজের দায়িত্ব ন্যস্ত
করেছি, তারা যথার্থরূপে তা পালন করেছে। অতঃপর মুসলমানরা যখন দলে দলে দোআ করতে করতে
ঈদগাহের দিকে রওয়ানা হয়। তখন আল্লাহ তায়ালা বলেন, “আমার ইজ্জতের কসম আমার শান
শওকত ও প্রতাপ প্রতিপত্তির কসম! আমি অবশ্য তাদের দোআ কবুল করব।"
তারপর তিনি বান্দা
বান্দিগণের উদ্দেশ্যে ডেকে ডেকে বলেন, ওহে আমার বান্দা-বান্দিগণ! আমি তোমাদেরকে
মাফ করে দিয়েছি তোমাদের পাপসমূহকে নেকীতে পরিণত করে দিয়েছি, এবার তোমরা নিজ নিজ
গৃহে প্রত্যাবর্তন কর।' তখন তারা নিষ্পাপ অবস্থায় এবং বিপুল পুণ্যের অধিকারী হয়ে
স্ব স্ব গৃহে প্রত্যাবর্তন করে।
ঈদুল আজহা
ঈদুল আযহার ফজীলতঃ
যিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখ শরীয়তের বিধানানুযায়ী
কোরবানীর উপযোগী প্রাণী জবাই করে আনন্দ উৎসব পালন করাকে ঈদুল আযহা বলে। এ দিন
দু'রাকাত নামায জামাতের সাথে আদায় করা সকলের জন্য ওয়াজিব। এ নামাযের সময় ও
নিয়মাবলী সব ঈদুল ফিতরের মতই।
ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতরের
মধ্যে সামান্য পরিমাণ পার্থক্য আছে। যেমন-
১. ঈদুল ফিতরের দিনে ঈদের
নামাযে যাওয়ার পূর্বে কিছু মিষ্টিদ্রব্য খেয়ে যাওয়া উত্তম কিন্তু ঈদুল আযাহার
সময় ঈদের নামাযের পূর্বে কিছু না খাওয়া উত্তম।
২. ঈদুল ফিতরের দিনে তাকবীরে
তাশরীক (আরোও পড়ুনঃ তাকবীরে তাশরীক)
আস্তে আস্তে পড়া নিয়ম আর ঈদুল আযহার দিনে একটু শব্দ করে পড়া উত্তম।
৩. তাকবীরে তাশরীক ঈদুল
ফিতরের বেলায় শুধুমাত্র ঐ দিনে পড়া উত্তম কিন্তু ঈদুল আযহার পূর্বের দিন হতে
অর্থাৎ জ্বিলহজ্জ মাসের নয় তারিখ ফজরের নামাযের পর হতে তের তারিখ আসরের নামায
পর্যন্ত প্রত্যেক ওয়াক্তের ফরয নামাযের পরে নারী-পুরুষ সকলের পাঠ করা ওয়াজিব।
৪. ঈদুল আযহার নামায কোন
কারণে ১০ তারিখে আদায় না করলে ১১ কিংবা ১২ তারিখে আদায় করলেও চলবে। কিন্তু ঈদুল
ফিতরের ক্ষেত্রে এ ধরনের কোন লম্বা সময় সীমা নেই।
আরো পড়তে পারেনঃ
ঈদুল ফিতরের তাৎপর্য-EdulFitorer
Tatporjo
সদকায়ে ফিতর/ফিতরা এর মাসায়েল/sadkaye fittor
ঈদুল আযহার নামাযের নিয়ত
نويت أن أصلى لله تعالى ركعتى صلوة العيد الأضحى مع ستة تكبيرات واجب الله تعالى متوجها إلى جهة الكعبة الشريفة الله أكبر
উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা
রাকাতাই সালাতিল ঈদুল আযহা মাআ' সিত্তাতি তাকবীরাতি ওয়াজিবুল্লাহি তায়ালা
মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা'বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
অর্থঃ আমি একমাত্র
আল্লাহর জন্যে কিবলামুখী হয়ে ঈদুল আযহার দু' রাকাত ওয়াজিব নামায ছয় তাকবীরের
সাথে ইমামের পিছনে আদায় করার নিয়ত করলাম। আল্লাহু আকবার।
তওবা কবুল
হওয়ার শর্ত/Taoba Kobul Hoyar Sorto
হজ্জের
গুরুত্ব ও ফযীলত-Hajjer Gurutto o Fajilat
বেসরকারিব্যবস্থাপনায় হজ করতে কত টাকা লাগবে?
এ বছর হজ করতে পারবেন ১০ লাখ
কোন দেশ থেকে কত মানুষ হজে যেতে পারবে
ঈদুল ফিতরের তাৎপর্য-EdulFitorer Tatporjo
সদকায়ে ফিতর/ফিতরা এর মাসায়েল/sadkaye fittor
নামাজ ও
যাকাত এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা
কুরবানীর ইতিহাস, তত্ত্ব, ফাযায়েল ও মাসায়েল
কোরবানীর
ইতিহাস ও ওয়াজিব হওয়ার শর্ত/Qurbani
কুরবানির পশু জবাইয়ের দোয়া ও পদ্ধতি
মহানবীকে স্বপ্নে দেখার উপায়-Mohanobi ke sopne dekhar amol
যে সময় দোয়া কবুল হয়-Je Somoy Dua Korle Kobol Hoy
ঈদের নামাজের
নিয়ত ও নিয়ম-Eider namajer niyot o niyom
আকিকার
গোসত কতদিন খাওয়া যাবে-Akikar Mangso
আকীকা এবং কিছু ভ্রান্ত ধারণা/Akikar Niyom
নফল রোজার মাসআলা/Nafal Rojar Masala
এতেকাফ এর
মাসাআলা/Etekaf er Masala/এতেকাফের শর্তসমূহ
শবে
কদর, এ'তেকাফ ও ফিতরা মাসআলা