চেয়ারে বসে নামাজ পড়ার মাসায়েল
ও বিধিবিধান
নামাযের জন্য কিয়াম, রুকু
ও সেজদা ফরজ। ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তির জন্য শরিয়া আইনে বর্ণিত নিয়ম অনুযায়ী এগুলো
পালন করা বাধ্যতামূলক। আর যে ব্যক্তি অসুস্থতা বা বয়সের কারণে অক্ষমতা আছে সে চেয়ারে
বসতে পারে।
আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ “তোমরা
নামাজকে হেফাযত করো। বিশেষ করে মধ্যবর্তী নামাজ। এবং আল্লাহর সামনে বিনীতভাবে দাঁড়াও।”
(সূরা বাকারা, আয়াত ২৩৮)
ইমরান বিন হুসাইন (রাঃ)
বলেনঃ “আমার অর্শ্বরোগ হয়েছিল। এই প্রসঙ্গে, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামকে নামাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করি। তিনি বললেন, অবশ্যই দাঁড়িয়ে নামাজ পড়বে,
যদি দাঁড়াতে না পার তবে বসে, যদি বসতে না পারো, বিছানায় গিয়ে নামাজ পড়।” (সহীহ
বুখারিঃ ১০৬৬)
সম্পর্কিত পোষ্ট
Ø নামাযের প্রয়োজনীয় দোয়াসমূহ
Ø
নামাজ বা সালাত আদায়ের নিয়ম
Ø
কাযা নামাজ পড়ার নিয়ম
Ø
তওবার নামাজ কিভাবে
পড়তে হয়
যে ব্যক্তি ফরজ নামাযের
জন্য দাঁড়াতে অক্ষম সে বসেই সালাত আদায় করবে, তাকে পুনরায় নামাজ পড়তে হবে না। এর
সওয়াব দাঁড়ানো নামাজের সওয়াব থেকে কম হবে না। কারণ সেই ব্যক্তি দাঁড়াতে অক্ষম। সহীহ
বুখারীতে লিপিবদ্ধ আছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “কোন
ব্যক্তি অসুস্থ হলে বা সফরে থাকলে, সে সুস্থ থাকাকালীন যে আমল করত তার জন্য তা লেখা
হবে।”
“যে ব্যক্তি এমন রোগে আক্রান্ত
হয়েছে যার কারণে সে দাঁড়াতে পারে না, তার জন্য বসে সালাত আদায় করা জায়েয এবং যে
ব্যক্তি এমন রোগে ভুগছে যার কারণে সে বসতে পারে না, তার জন্য শুয়ে সালাত আদায় করা
জায়েয।”
যে ব্যক্তি দাঁড়াতে অক্ষম
চেয়ারে বসা তার জন্য জায়েজ আছে, সে সঠিক নিয়মে রুকু-সিজদা করবে। যদি কেউ দাঁড়াতে
সক্ষম, কিন্তু রুকু করা কঠিন, তবে সে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়বে, তারপর রুকু-সেজদার সময়
চেয়ারে বসে পড়বে। আর সিজদা করার সময় মাথাকে রুকুর চেয়ে বেশি নোয়াবে।
ইবনে কুদামা আল-মাকদিসি
বলেছেনঃ
যে ব্যক্তি দাঁড়াতে সক্ষম,
রুকু কিংবা সিজদা করতে অক্ষম, তার দাঁড়ানো মাফ হবে না। সে ব্যক্তি দাঁড়িয়ে সালাত
আদায় করবে। ইশারায় রুকু করবে। তারপর বসে ইশারায় সিজদা করুন।
আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ আর
তোমরা আল্লাহর সামনে বিনয়ী হও। তদুপরি, এটি দাঁড়াতে সক্ষম ব্যক্তির জন্য রুকন (আবশ্যকীয়)।
আরো পড়ুনঃ
Ø
প্রথম কাতারে নামাজ পড়ার ফযীলত
Ø
নামাজ অবস্থায় অযূ ভঙ্গ হলে করণীয়
Ø আকিকার গোসত কতদিন খাওয়া যাবে
Ø
প্রস্রাব-পায়খানা করার নিয়ম
Ø
ঢিলা-কুলুখ
ব্যবহারের নিয়ম
শায়খ আব্দুল আযীয বিন বায
(রহঃ) বলেনঃ
যে ব্যক্তি মেঝেতে বসে বা
চেয়ারে বসে নামাজ পড়ে তার সেজদা রুকু থেকে নিচু হওয়া বাধ্যতামূলক। সুন্নত হল সেজদা
করার সময় তার হাঁটুতে হাত রাখা। আর সেজদা অবস্থায় সম্ভব হলে উভয় হাত মাটিতে রাখা
ওয়াজিব। আর সক্ষম না হলে হাতদ্বয় হাঁটুর উপর রাখা।
কেউ অক্ষম হয়ে চেয়ারে
বসে নামাজ পড়লে তাতে আপত্তি নেই। প্রমাণ হল আল্লাহ তায়ালার বাণীঃ “তোমরা সাধ্যমত
আল্লাহকে ভয় কর।” এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন
“যখন আমি তোমাকে আদেশ করি, তখন তা তোমরা যথাসাধ্য মেনে নাও।" [সহীহ বুখারী ও সহীহ
মুসলিম]
চেয়ার
কাতারে রাখা
আলেমগণ উল্লেখ করেছেন যে,
যে ব্যক্তি বসে সালাত আদায় করে তার জন্য শর্ত হল তার নিতম্ব (চেয়ার বা বসার বস্তু)
যেন কাতারের সমান্তরাল হয়, কাতারের সামনে বা পিছনে না থাকে।
আরও
পড়তে পারেনঃ
Ø দোয়া করার নিয়ম
Ø মহানবীকে
স্বপ্নে দেখার উপায়
Ø যে সময় দোয়া কবুল হয়
Ø ইবাদত কবূল হওয়ার শর্তাবলী ১ম পর্ব
Ø সূরা ফাতিহার বৈশিষ্ট্য ও ফজিলত
Ø
কবিরা গুনাহসমূহ
ইকতিদা শুদ্ধ হওয়া আবশ্যক
(অর্থাৎ ইমামের পিছনে থাকা মুক্তাদীর ইকতিদা) হলঃ মুক্তাদী অবশ্যই অবস্থানে ইমামের
চেয়ে এগিয়ে থাকবেন না। সামনে থাকা বা না থাকার ক্ষেত্রে দেখার বিষয় হল: দাঁড়ানো
ব্যক্তির গোড়ালি, আর তা হলো পায়ের পাতার পশ্চাদ্ভাগ, টাকনু নয়। গোড়ালি সমান্তরালে
হয়, তবে মুক্তাদির পায়ের আঙ্গুলগুলো লম্বা হয়ে সামনের দিকে যায় তাতে দোষের কিছু
নেই। আর বসার ক্ষেত্রে পজিশন হলো নিতম্ব। আর শুয়া আবস্থায় তার পার্শ্বদেশ।
সুতরাং, যদি একজন নামাযী
নামাজের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চেয়ারে বসে নামাজ আদায় করে, তবে তাদের উচিত তাদের বসার
অবস্থানটি কাতারের সমান্তরালে করা।
যদি সে দাঁড়িয়ে নামাজ
পড়ে তবে রুকু ও সিজদা বসে আদায় করে তাহলে ধর্তব্য হবে দাঁড়ানো অবস্থা। এর মানে হল
যে, ব্যক্তিটি সারির বা কাতারের সমান্তরালে দাঁড়াবে। এই মতামতের ভিত্তিতে, তাহলে চেয়ারটি
সারির পিছনে থাকবে। তবে এটি এমন জায়গায় হওয়া উচিত যাতে পিছনের মুসল্লিদের কষ্ট না
হয়।
Ø তওবা কবুল হওয়ার শর্ত
Ø ৫ টি কথায় সকল চাওয়া/ যেসব আমলে দ্রুত দোয়া কবুল হয়
Ø সালাতুস তাসবীহ
Ø
শিরকের বিবরণ
Ø মা-বাবা সাথে সন্তানের আচরণ কেমন
হবে
Ø
মহিলাদের
যাদের সাথে দেখা দেয়া জায়েয
Ø
জুমার
গুরুত্ব ও ফজিলত
Ø ইসলামে প্রতিবেশীর অধিকার পর্ব ১
Ø ইসলামে মেহমানদারির
গুরুত্ব ও বিধান
Ø ফরজ সালাতের পরের দোয়া ও জিকির
Ø যৌবনকাল ইসলামে ইবাদতের শ্রেষ্ঠ সময়
Ø চল্লিশ দিন জামাতে নামাজ পড়ার ফজিলত #তাকবীরউলা