Breaking

April 11, 2022

সদকায়ে ফিতর/ফিতরার মাসায়েল/Sadkaye Fitor/Fitrarar Masala

 ছাদাক্বাতুল ফিতর মুসলমান নারী-পুরুষ, ছোট-বড়, সকলের জন্য আদায় করা ওয়াজিব। এ মর্মে হাদীছে এসেছে,

 

عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ فَرَضَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم زَكَاةَ الْفِطْرِ صَاعًا مِنْ تَمَرٍ أَوْ صَاعًا مِنْ شَعِيْرٍ عَلَى الْحُرِّ وَالْعَبْدِ وَالذَّكَرِ وَالأُنْثَى وَالصَّغِيْرِ وَالْكَبِيْرِ مِنَ الْمُسْلِمِيْنَ وَأَمَرَ بِهَا أَنْ تُؤَدَّى قَبْلَ خُرُوْجِ النَّاسِ إِلَى الصَّلاَةِ

ইবনু উমর (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) তাঁর উম্মতের প্রত্যেক ব্যক্তির উপর, ক্রীতদাস ও স্বাধীন, নর-নারী, যুবক-বৃদ্ধ, প্রত্যেকের উপর খেজুর বা যবের ছয় ভাগের এক ভাগ যাকাতুল ফিতর ফরয করেছেন এবং তা করার নির্দেশ দিয়েছেন। ঈদগাহে রওয়ানা হওয়ার আগে পরিশোধ করা উত্তম। সাদেকের আগে ঈদের দিন কোনো ব্যক্তি মারা গেলে তার পক্ষ থেকে ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব নয়। এভাবে সুবেহে সাদেকের পর সন্তান জন্ম নিলে তার পক্ষ থেকে ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব নয়। কিন্তু সুবহে সাদেক বা সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগেই যদি কোনো ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করে তাহলে তাদের ওপরও ফিতরাহ ওয়াজিব। ছাদক্বাতুল ফিতর হল জীবনের দান, সম্পদ নয়। তাই জীবিত সকল মুসলমানের জীবনের জন্য দান করা ওয়াজিব। রোজা রাখতে না পারলেও তার জন্য ফিতরা ওয়াজিব।

সদকায়ে ফিতর/ফিতরা এর মাসায়েল


Ø ঈদুল ফিতরের দিন সুব্‌হে সাদিকের সময় যার নিকট যাকাত ফরয হওয়া পরিমাণ অর্থ/সম্পদ থাকে তার উপর সদকায়ে ফিতর বা ফিতরা ওয়াজিব। তবে যাকাতের নেছাবের ক্ষেত্রে ঘরের আসবাব-পত্র বা ঘরের মূল্য ইত্যাদি হিসাবে ধরা হয় না কিন্তু ফিতরার ক্ষেত্র অত্যাবশ্যকীয় আসবাব-পত্র ব্যতীত অন্যান্য আসবাব-পত্র, সৌখিন দ্রব্যাদি, খালি ঘর বা ভাড়ার ঘর (যার ভাড়ার উপর জীবিকা নির্ভরশীল নয়) এসব কিছুর মূল্য হিসাবে ধরা হবে।

Ø রোজা না রাখলে বা রাখতে না পারলে তার উপরও ফিতরা দেওয়া ওয়াজিব। এ কথা নয় যে রোজা না রাখলে ফিতরাও দিত হয়না।

Ø সদকায়ে ফিতর/ফিতরা নিজের পক্ষ থেকে এবং পিতা হলে নিজের না-বালেগ সন্তানের পক্ষ থেকে দেয়া ওয়াজিব। বালেগ সন্তান, স্ত্রী, স্বামী, চাকর-চাকরানী, মাতা-পিতা প্রমুখের পক্ষ থেকে দেয়া ওয়াজিব নয়। তবেঁ বালেগ সন্তান পাগল হলে তার পক্ষ থেকে দেয়া পিতার উপর ওয়াজিব।

Ø একান্নভুক্ত পরিবার হলে বালেগ সন্তান, মাতা, পিতার পক্ষ থেকে এবং স্ত্রীর পক্ষ থেকে ফিতরা দেয়া মোস্তাহাব, ওয়াজিব নয়।

Ø সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব না হলেও সঙ্গতি থাকলে দেয়া মোস্তাহাব এবং অনেক ছওয়াবের কাজ।

Ø ফিতরায় ৮০ তোলার সেরের হিসাবে ১ সের সাড়ে বার ছটাক (১ কেজি ৬৬২ গ্রাম) গম বা আটা কিনবা তার মূল্য দিতে হবে। পূর্ণ দুই সের (১ কেজি ৮৬৬ গ্রাম) বা তার মূল্য দেয়া উত্তম।

Ø ফিতরায় যব দিলে ৮০ তোলার সেরের হিসাবে ৩ সের ৯ ছটাক (প্রায় ৩ কেজি ৩২৫ গ্রাম) দিতে হবে। পূর্ণ ৪ সের (৩ কেজি ৭৩২ গ্রাম) দেয়া উত্তম।

Ø গম, আটা ও যব ব্যতীত অন্যান্য খাদ্যশস্য যেমন ধান, চাউল, বুট, কলাই মটর ইত্যাদি দ্বারা ফিতরা আদায় করতে চাইলে বাজার দরে উপরোক্ত পরিমাণ গম বা যবের যে মূল্য হয় সেই মূল্যের ধান, চাউল ইত্যাদি দিতে হবে।

Ø ফিতরায় গম যব ইত্যাদি শস্য দেয়ার চেয়ে তার মূল্য- নগদ টাকা পয়সা দেয়া উত্তম।

Ø ফিতরা ঈদুল ফিতরের দিন ঈদের নামাজের পূর্বেই দেয়া উত্তম। নামাজের পূর্বে দিতে না পারলে পরে দিলেও চলবে। ঈদের দিনের পূর্বে রমজানের মধ্যে দিয়ে দেয়াও দোরস্ত আছে।

Ø যাকে যাকাত দেয়া যায় তাকে ফিতরা দেয়া যায়।

Ø একজনের ফিতরা একজনকে দেয়া বা একজনের ফিতরা কয়েকজনকে দেয়া উভয়ই দোরস্ত আছে। কয়েকজনের ফিতরাও একজনকে দেয়া দোরস্ত আছে কিন্তু তার দ্বারা যেন সে মালেকে নেছাব না হয়ে যায়। অধিকতর উত্তম হল একজনকে এই পরিমাণ ফিতরা দেয়া, যার দ্বারা সে ছোট-খাট প্রয়োজন পূরণ করতে পারে বা পরিবার-পরিজন নিয়ে দু’তিন বেলা খেতে পারে।



আরো পড়তে পারেনঃ

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ত

রোজা ভঙ্গের কারণসমুহ

রোজার মাকরুহসমূহ

রোজার কাফ্‌ফারা-র মাসায়েল

রোজার কাযার মাসায়েল

নফল রোজার মাসআলা/Nafal Rojar Masala

এতেকাফ-Etekaf-ইতেকাফ

এতেকাফ এর মাসাআলা/Etekaf er Masala/এতেকাফের শর্তসমূহ

যেসব কারণে এতেকাফ ফাসেদ তথা নষ্ট হয়ে যায় এবং কাযা করতে হয়

শবে কদর, এ'তেকাফ ও ফিতরা মাসআলা

শাওয়ালের ছয় রোজা

হজ্জের গুরুত্ব ও ফযীলত-Hajjer Gurutto o Fajilat

ঈদুল ফিতরের তাৎপর্য-EdulFitorer Tatporjo

নামাজ ও যাকাত এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

কুরবানীর ইতিহাস, তত্ত্ব, ফাযায়েল ও মাসায়েল

লাইলাতুল কদরের ফজিলত

৫ টি কথায় সকল চাওয়া/ যেসব আমলে দ্রুত দোয়া কবুল হয়

তওবার নামাজ কিভাবে পড়তে হয়

ইবাদত কবূল হওয়ার শর্তাবলী ১ম পর্ব

ইসলাম ও ঈমানের দাওয়াত

নামাযের প্রয়োজনীয় দোয়াসমূহ


Popular Posts